Advertisement
E-Paper

শুনানির নোটিস পেয়ে চিলেকোঠায় গিয়ে ‘আত্মহত্যা’ রামনগরের বৃদ্ধের! নথির চিন্তায় সংজ্ঞাহীন হুগলির যুবক

আবার ‘এসআইআর-আতঙ্কে’ মৃত্যুর অভিযোগ। এ বার ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর। অন্য দিকে, হুগলির তারকেশ্বরে এক যুবকের অসুস্থতার জন্য দায়ী করা হচ্ছে এসআইআরকে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:১৬

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই বলে এসআইআরের শুনানিতে ডাক পড়েছিল। শুনানিতে কী হবে, সেই আশঙ্কাতেই আত্মঘাতী হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের এক বৃদ্ধ। পরিবারের দাবি তেমনই।

মঙ্গলবার ভোরে রামনগরের সাদি গ্রামের বাসিন্দা ৭৫ বছরের বিমল শী-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির চিলেকোঠা থেকে। পরিবারের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম-না থাকায় শুনানিতে যাওয়ার নোটিস পেয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকেই নথিপত্র নিয়ে চরম আতঙ্কে ছিলেন বিমল।

কর্মসূত্রে দীর্ঘ সময় কলকাতায় কাটিয়েছেন রামনগরের বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, ওই কারণে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি তাঁর। কর্মজীবনে অবসরের পরে পাকাপাকি ভাবে রামনগরের পৈতৃক বাড়িতে ফিরে যান বিমল। তার পর ভোটার তালিকায় নাম তুলিয়েছিলেন। নিয়মিত ভোটও দিয়েছেন। সম্প্রতি এসআইআর ফর্ম পূরণ করেন তিনি। কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম-না থাকায় চার দিন আগে তাঁর কাছে শুনানির নোটিস পৌঁছোয়। মৃতের পুত্র দীপক শী বলেন, “এসআইআরের নোটিস এসেছিল ৪ দিন আগে। তার পর থেকেই বাবা টেনশনে পড়ে যান। এই কাগজ- সেই কাগজ নিয়ে টানাটানি করছিলেন। প্রয়োজনীয় নথিপত্র বাড়িতেই ছিল। কিন্তু উনি উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। ভোরে বাড়ির চিলেকোঠায় ওঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাই। এমন পদক্ষেপ করতে পারেন, কল্পনাও করতে পারিনি।’’

পরিবার সূত্রে খবর, আগামী ২ জানুয়ারি বিমলকে শুনানিতে ডাকা হয়েছিল। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাজারে বেরিয়েছিলেন। নাতির জন্য কেকও কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিতরে ভিতরে যে কতটা আতঙ্কিত ছিলেন, তা কেউ-ই টের পাননি। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ বিছানায় স্বামীকে না দেখতে পেয়ে ছেলেকে ডাকেন বিমলের স্ত্রী। এ ঘর-ও ঘর ঘুরে চিলেকোঠায় যান তাঁরা। চিলেকোঠার দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। দরজা ভাঙতেই দেখা যায় বিমলের ঝুলন্ত দেহ।

রামনগর থানার পুলিশ বিমলের দেহ উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অন্য দিকে, এসআইআরের শুনানির ‘ভয়ে’ অসুস্থ হয়ে হুগলির তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি তারকেশ্বরের বালিগড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিগড়ি গ্রামে। পরিবার সূত্রে খবর, আগামী ২ জানুয়ারি শুনানির জন্য ডাকা হয়েছে ৪০ বছরের গণেশ কিস্কুকে। সেই নোটিস পেয়েই ঘুম উড়ে যায় যুবকের। মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ সংজ্ঞাহীন হয়ে বাড়িতে পড়ে যান। যুবকের স্ত্রী সরস্বতী কিস্কু বলেন, ‘‘২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাড়ির কারও নাম নেই। গণেশের বাবা-মা ২০০২ সালের আগে মারা যান। দিদির কাছে মানুষ উনি। জেলায় জেলায় ঘুরে নানা কাজ করেন। সরকারি নথিপত্র তেমন গোছানো নেই। ভোটার অধিকার হারানোর ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন স্বামী।’’

SIR West Bengal SIR Death Ill
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy