E-Paper

মাপ অনুযায়ী গুদামের ভাড়া সাতশো থেকে দশ হাজার টাকা, দত্তপুকুরে বেআইনি বাজির ব্যবসা বসত বাড়িতে

বাজির কারবারিরা জানাচ্ছেন, বাজি তৈরির মালমশলা, কাগজ-প্লাস্টিকের লেভেল, প্যাকেট— সবই দরজায় পৌঁছে যায়। বাড়ি বসেই হয় বাজির মোড়কজাতকরণ। বারুদের কাজ মূলত হয় বাগান ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে।

ঋষি চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৩ ০৪:৪২
An image of Fire Cracker Factory

বাজি-ঘর: বিস্ফোরণস্থলের আশপাশের এলাকায় ঘরে ঘরে তৈরি হয় বাজি। সেই সব জায়গা ঘুরে দেখছেন পুলিশকর্মীরা। মঙ্গলবার, মোচপোলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

কারখানা ক’টা? কত লোক যুক্ত কারবারে? কত টাকার লেনদেন হয়?

স্পষ্ট উত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। তবে দত্তপুকুরের ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, অন্তত হাজারখানেক পরিবার জড়িত বেআইনি বাজির কারবারে। বাইরের জেলা থেকেও কাজে আসেন কয়েকশো মানুষ। কোটি কোটি টাকার কেনাবেচা হয় বছরভর।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুর, বেরুনানপুকুরিয়া, মোচপোল পশ্চিমপাড়া এলাকায় চলে মূল কারবার। চকলেট বোমা, কালীপটকা, তুবড়ি, আছাড় বোমা-সহ প্রায় ১৪ রকম বাজি তৈরি হয়। পুজো, বিয়ে ছাড়াও জঙ্গলে বন্যপ্রাণী তাড়াতেও ব্যবহার হয় এখানকার বাজি। সে সব যায় ভিন্‌ রাজ্যেও। উৎসবের মরসুমে বহু দূর থেকে অনেকে বাজি কিনতে আসেন গ্রামে।

বাজির কারবারিরা জানাচ্ছেন, বাজি তৈরির মালমশলা, কাগজ-প্লাস্টিকের লেভেল, প্যাকেট— সবই দরজায় পৌঁছে যায়। বাড়ি বসেই হয় বাজির মোড়কজাতকরণ। বারুদের কাজ মূলত হয় বাগান ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে। ফলে এই ব্যবসায় বাড়ি ভাড়া দিয়েও অনেকে মোটা টাকা আয় করেন।

মশলা মেশানোর কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের পারিশ্রমিক সব থেকে বেশি। দৈনিক মাথাপিছু প্রায় ১২০০ টাকা। ওই মশলা মাটির ঘটে, কাগজের বাক্সে ভরে অন্য দল। সেই কর্মীদের দিনে ৬০০-১০০০ টাকা আয়। পরের ধাপে সলতে পাকানো, রঙিন কাগজে মুড়ে লেবেল লাগানোর কাজে দৈনিক শ’পাঁচেক টাকা আয়। শেষ ধাপে বাজি গুনে প্যাকেটে ভরেন যাঁরা, তাঁরাও পান দিনে ৫০০ টাকা।

এলাকার শতাধিক গুদামে তৈরি বাজি থাকে। এ জন্য বাড়ির বারান্দা, ঘর, দোকান ভাড়া নেওয়া হয়। গুদামের মাপ অনুযায়ী ভাড়া মেলে ৭০০-১০০০০ টাকা। গুদাম থেকে গাড়িতে বাজির বাক্স তোলা হয় রাতে। এই কাজে আয় দিনে ২০০-৫০০ টাকা। স্থানীয় বাসিন্দা তৈবুর রহমানের দাবি, ‘‘ইছাপুর নীলগঞ্জ এলাকায় বেআইনি বাজি ব্যবসায় অনেক নেতার টাকা লগ্নি আছে‌। হাজার কোটির বেশি লেনদেন হয় বছরভর।’’

এ নিয়ে নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। মন্তব্যে নারাজ পুলিশকর্তারাও। তবে স্থানীয় বিধায়ক রথীন ঘোষ বিস্ফোরণের দিন দাবি করেছিলেন, বাজি কারবার নিয়ে কিছু জানতেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে নতুন করে আর কিছু বলতে চাননি রথীন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dattapukur Blast Fire Crackers Fire Cracker Factory police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy