Advertisement
E-Paper

হজে গিয়ে ফেরা হল না আসানসোলের মনিজার

সৌদি আরবের ক্রেন দুর্ঘটনায় রাজ্যের একমাত্র মৃত হজ যাত্রী আসানসোলের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মনিজা বেগম (৫৯)। আসানসোলের কল্যানপুর সংলগ্ন এডিডিএ স্যাটেলাইট টাউনসিপ প্রকল্প এলাকায় তাঁর বাড়ি। তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে গত ২৩ আগষ্ট হজ যাত্রায় গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৭:১২
মৃত মনিজা আহমদ।

মৃত মনিজা আহমদ।

সৌদি আরবের ক্রেন দুর্ঘটনায় রাজ্যের একমাত্র মৃত হজ যাত্রী আসানসোলের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মনিজা বেগম (৫৯)। আসানসোলের কল্যানপুর সংলগ্ন এডিডিএ স্যাটেলাইট টাউনসিপ প্রকল্প এলাকায় তাঁর বাড়ি। তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে গত ২৩ আগষ্ট হজ যাত্রায় গিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসানসোলে পৌছনোর পরই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

টেলিভিশনের চ্যানেল ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ওই দুর্ঘটনার সংবাদ সম্প্রচার হবার পরই আসানসোল মহকুমা হজ কমিটির সদস্যরা খোঁজ খবর শুরু করেন। প্রত্যেকের নাম ও টেলিফোনের নম্বর ধরে জানার চেষ্টা করা হয় তাঁরা সবাই কেমন আছেন। শনিবার দুপুরে জানা যায় ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আসানসোলের কল্যানপুর এলাকার বাসিন্দা মনিজা বেগম। এই খবর ছড়িয়ে পরতেই গোটা এলাকা শোক নেমে আসে। আসানসোল হজ কমিটির সদস্য মহম্মদ আফরোজ বলেন, আমরা খবর পাওয়া মাত্রই মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছি’’। তাঁরা জানিয়েছেন, দেহ সত্কারের বিষয়ে পরিবারের তরফে নেওয়া সিদ্ধান্ত মতোই তাঁরা কাজ করবেন।

জানা গিয়েছে, এই দম্পতির এক মাত্র ছেলে মহঃ ফয়িজ বেশ কয়েক বছর ধরে কর্মসূত্রে দিল্লীতে রয়েছেন। মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে খুবই ভেঙে পড়েছেন তিনি। কথা বলার অবস্থায় নেই। অনবরত কেঁদেই চলেছেন। কোনও মতে কান্না থামিয়ে তিনি বলেন, শনিবার সকাল ছটা নাগাদ বাবার ফোন পেয়ে সব জানতে পারি। তখনও মায়ের কোনও খবর বাবা পাননি। তিনি পাগলের মতো দৌড়ঝাঁপ করছেন। চারিদিকে মৃতদেহ ছড়িয়ে রয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা এলাকা। সৌদি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সবাইকে সরিয়ে দিয়েছে। বাবাও সেখান থেকে কিছুটা মায়ের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। যদি কোনও সংবাদ পাওয়া যায়। কতক্ষন ওই ভাবে কেটে গিয়েছে বাবা জানেন না। বেশ বেলার দিকে সার দিয়ে শোয়ানো মৃতদেহের মাথায় সেটে দেওয়া নাম পরিচয় দেখে মায়ের দেহ শনাক্ত করেছেন বাবা’’। বলতে বলতে ফোনের ওপার থেকে কান্নায় ভেঙে পরেন তিনি।

দেহ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ফয়িজ বলেন, “সেটা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে এই সিদ্ধান্ত বাবাই নিতে পারবেন। সেখানে পরিচিত জনদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা হবে।”

এ দিন দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মনিজা বেগমের ঘর তালা বন্ধ। প্রতিবেশীরা ইতি উতি ঘুরছেন। স্থানীয় বাসিন্দা খুরসিদ গনি বলেন, “আমরা খুবই শোক পেয়েছি। মনিজা বেগম আর ফিরবেন না ভেবেই খারাপ লাগছে।’’

প্রতিবেশীরা জানালেন, সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ চিত্তরঞ্জনের রেল ইঞ্জিন কারখানায় চাকরি করতেন। বছর সাতেক আগে অবসর নিয়ে আসানসোলের এই প্রকল্প এলাকায় বাড়ি বানিয়ে এসেছেন। গত ২৩ আগষ্ট মনিজা বেগম এবং তাঁর স্বামী সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ হজের উদ্দেশে রওনা হন। যাবার সময় এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই তাঁদের দু’জনকে ষ্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দেন। সবাই ভেবেছিলেন, ফিরে আসার পরে তাঁদের এই তীর্থ যাত্রা আনন্দের সঙ্গে উদ্‌যাপন করবেন।

asansole lady dead haj crane accident mecca crane accident manija ahmed crane accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy