প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি নিয়ে পরিসংখ্যানের মারপ্যাঁচে রাজ্য যে আসল ছবি লুকোতে চাইছে, এই অভিযোগ অনেকেরই। কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে শিলিগুড়িতে প্যাঁচে পড়েছে প্রশাসন। সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে কৃতিত্ব নিতে মাঠে নেমে পড়েছেন বামপন্থী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শেষ অবধি টনক নড়ার পরে সেখানে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কাঁধবদল করে চলে গিয়েছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদ বা এসজেডিএ-র কাছে। এই কাজে তাদের শুধু আর্থিক সাহায্যই দেওয়া হয়নি, সম্প্রতি ডেঙ্গি মোকাবিলা নিয়ে এক বৈঠকে ডেকে সাধুবাদও জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন অশোকবাবু। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে তাঁরা যে ভাল ভাবেই কাজ করছেন, সে কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার পুরমন্ত্রীকে একটি চিঠিও দিয়েছেন তিনি। সেখানে সেই স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যানটি তুলে ধরেছেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে তাঁর বক্তব্য, সর্বত্র ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট পুরসভা। সেখানে শিলিগুড়িতে বামেরা ক্ষমতায় বলেই কি আলাদা নিয়ম?
রাজ্যে বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পুরসভার সংখ্যা নগণ্য। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর খাসতালুক বহরমপুর পুরসভাও এখন তৃণমূলের দখলে। শিলিগুড়ির স্থানীয় তৃণমূল নেতারা একান্তে মানছেন, স্বাস্থ্য দফতর যখন ডেঙ্গি নিয়ে পরিসংখ্যান দেয়, তখন বামেদের দখলে থাকার বিষয়টি সম্ভবত তাদের মাথায় ছিল না। সেই হিসেবটি তুলে ধরে অশোকবাবুর দাবি, ‘‘মাস দেড়েক আগেও যেখানে সপ্তাহে ১৯২ থেকে ১৯৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছিলেন, সেটা এখন কমে দাঁড়িয়েছে সপ্তাহে ২০-২২ জনে।’’ সরকারি ভাবে শিলিগুড়িতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৪। যেখানে বেসরকারি হিসেব বলছে, মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।
বামেদের অনেকেই এখন অভিযোগ করছেন, কৃতিত্ব যে অশোকবাবুদের ঝুলিতে চলে যাচ্ছে, সেটা বুঝেই তড়িঘড়ি এসজেডিএ-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই কাজে তাদের টাকাও দেওয়া হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা অবশ্য এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, প্রথম থেকেই শিলিগুড়ি পুরসভার যথেষ্ট ঢিলেমি ছিল। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, ডেঙ্গি নিয়ে দু’মাস ধরে সমীক্ষা করেছেন অশোকবাবুরা। কিন্তু তার রিপোর্ট এখনও সরকারকে জমা দেননি। তাঁদের বক্তব্য, স্বাভাবিক ভাবেই এর পর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসজেডিএ-কে। তাই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কৃতিত্ব তাদেরই।
অশোক অবশ্য এ দিনও সব অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘রাজনীতি কারা করছে, সকলেই দেখছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy