দার্জিলিঙে সভাস্থলেই আক্রান্ত রাজ্য বিজেপির সভাপতি। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম দিন কালো পতাকা, বিক্ষোভের উপরে কেটেছে। কিন্তু, দার্জিলিং সফরের দ্বিতীয় দিনে আক্রান্ত হলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং জেলা সদরে ‘গোর্খা দুখ নিবারণী সমিতি’র হলের সামনের ঘটনা। সেখানে সভাস্থলে হামলা, মাইক কেড়ে নেওয়ার পরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দার্জিলিং সদর থানায় অভিযোগ জানাতে রওনা হন। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। দিলীপবাবুর আপ্ত সাহায়ক দেব সাহা এবং দার্জিলিঙের যুব নেতা রাকেশ পোখরেলকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। সেখানে রাকেশকে লাথি মারা হয়। জখম বিজেপি নেতা-কর্মীদের হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বিনয় তামাঙ্গের লোকজনই হামলা করেছে বলে সন্দেহ। কলকাতা থেকে মদত দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।’’
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করবে।’’ কেন দিলীপবাবুর নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়নি? পুলিশ সুপার জানান, তাঁদের কাছে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দৈনন্দিন কর্মসূচি জানাননি। এমনকী, বিনা অনুমতিতে সভার আয়োজন করা হয়েছিল বলেও পুলিশ সুপারের দাবি। ওই ঘটনার পরে দিলীপবাবুকে পাহাড় ছাড়তে হবে বলে বিক্ষোভকারীরা বারেবারে স্লোগান দেন। কিন্তু, দিলীপবাবু পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী রাতে দার্জিলিঙে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। শুক্রবার তাঁর সিকিম যাওয়ার কথা।
দেখুন হামলার ভিডিও:
আরও পড়ুন: বিজেপি ছাড়া তৃণমূল দাঁড়াত না, খোঁচা মুকুলের
আরও পড়ুন: ভাঁড়ারে অস্ত্র, তবু পিছিয়ে বাম-কংগ্রেস
এ দিন সকালে কালিম্পং থেকে দার্জিলিং পৌঁছনোর পথেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন দিলীপবাবু। বাতাসিয়া লুপের কাছে কালো পতাকা দেখায় বিক্ষোভকারীরা। এর পরে দার্জিলিং স্টেশন থেকে চকবাজার পর্যন্ত দিলীপবাবু মিছিল করেন। চকবাজারে একটি সভাও হয়। সে সময়েও দার্জিলিং শহরের বিভিন্ন এলাকায় কালো পতাকা হাতে নিয়ে যুবকদের দলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বিকেল তিনটে নাগাদ সভাস্থলে পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তার আগেই বিক্ষোভকারীরা হলে উপস্থিত হয়েছিল বলে বিজেপি-র দাবি। দিলীপবাবু সভাঘরে ঢুকতেই ‘গোর্খাল্যান্ড জিন্দাবাদ’, ‘বিনয় তামাঙ্গ জিন্দাবাদ’— স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভকারীরা মারমুখী হয়ে ওঠে বলে বিজেপি-র দাবি। বিনয় তামাঙ্গের অনুগামীদের অবশ্য দাবি, তাঁরা কোনও কোনও হামলার ঘটনায় জড়িত নন।
রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের অভিযোগ, দীর্ঘ বন্ধের পরে পাহাড় যখন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে, সেই সময়ে সেখানে রাজনীতি করতে নেমে গোলমাল পাকিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘এমনিতেই টানা বন্ধে বিস্তর ক্ষতি হওয়ায় আমজনতা তিতিবিরক্ত। ক্ষোভের আঁচ প্রশমিত হয়নি। সেখানে গিয়ে পাহাড় অচলকারী নেতার হয়ে সওয়াল করায় পাহাড়বাসীর ক্ষোভের স্বতস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’’ যা শোনার পরে বিজেপি-র রাজ্য রাজ্য নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের মন্তব্য, ‘‘পাহাড় যে স্বাভাবিক হয়নি সে পর্যটন মন্ত্রীর কথায় বোঝাই যাচ্ছে।’’ পাশাপাশি দিলীপবাবু বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের দাবি অনেক পুরনো এবং আবেগের। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এই দাবি নিয়ে আলোচনা করে কোনও সমাধান খুঁজতে হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘এই পরিস্থিতিতে দার্জিলিঙে এসে বিপদে না পড়ে পর্যটকরা অসমে গেলেই ভাল করবেন।’’
এতে বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা আরও চটেছেন। অনীত বলেছেন, ‘‘সবে পাহাড়ে পর্যটকেরা যাতায়াত শুরু করেছেন। তখন এমন মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।’’দলের রাজ্য সভাপতি আক্রান্ত হওয়ায় কলকাতায় পথে নেমেছে বিজেপি। দার্জিলিঙে দিলীপ বাবুর আক্রান্ত হওয়ার খবর আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল বিজেপি দফতরে। তার পরই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রাজ্য বিজেপির সদর দফতর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ আটকে মিছিল এগনোয় যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে মধ্য কলকাতার বড় এলাকা জুড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy