পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে আদালত অবমাননার মামলা সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হল মামলাকারী সংস্থা। কারণ, ওই মামলায় কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল অনুমতি দেননি। তাঁর অনুমতি ছাড়া মামলা শুনানির জন্য উঠলে শীর্ষ আদালতে তা খারিজ হয়ে যেত। তার আগে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের ওই সংক্রান্ত রায় নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মমতা। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল আদালত অবমাননার শামিল। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ‘আত্মদীপ’ নামের এক সংস্থা। প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চে গত জুলাই মাসে মামলাটি উঠেছিল। তখনই প্রধান বিচারপতি মামলাকারীকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। রাজনীতির যুদ্ধ অন্যত্র গিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল এই মামলার জন্য আদৌ অনুমতি দেবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গবই।
আরও পড়ুন:
কোনও নির্দিষ্ট মামলার সঙ্গে যুক্ত কারও বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করলে আলাদা করে অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলার সঙ্গে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কোনও যোগ নেই। তিনি ওই মামলার অংশ নন। বাইরে থেকে সাংবিধানিক পদাধিকারী হিসাবে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাই এ সব ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হলে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল এবং হাই কোর্টে মামলা হলে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমতি লাগে। মমতার বিরুদ্ধে মামলায় ওই অনুমতি মিলল না।
অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি না মেলায় মামলা প্রত্যাহারের অনুমতি চায় সংশ্লিষ্ট সংস্থা। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই অনুমতি দিয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করে দেয়। ওই রায় নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মমতা। মামলাকারী সংস্থার আইনজীবী শীর্ষ আদালতে মমতার সে দিনের বক্তব্যের অনুবাদ জমা দিয়েছিলেন। তবে মামলাটি প্রত্যাহার করতে হল।