খেত থেকে ধান তুলে নেওয়ার পরে ওই জমিতেই কাটা খড়ের আস্তরণে আলু ফলিয়েছেন গোসাবার সাতজেলিয়ার মণিকা মণ্ডল রায়। ২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লায় সর্বস্ব হারিয়েছেন মণিকার মতো আরও অনেকেই। কখনও ভাবতে পারেননি ফসল ফলবে নোনা জলে নষ্ট হওয়া জমিতে। ১৫ বছর পরে কৃষিতেই স্বনির্ভর মণিকারা। সোমবার তাঁর সঙ্গে খেত থেকে ফলন্ত আলু তুললেন কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার কনসাল জেনারেল হিউ বয়লান। শুনলেন বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত হওয়ার পরেও কৃষিতে স্বনির্ভর হওয়া মহিলাদের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের কথা।
ফি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত সুন্দরবনের দ্বীপগুলোতে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলায় বছর পাঁচেক আগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল অস্ট্রেলিয়া সরকারের কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন। ততদিনে অবশ্য হেতালবাড়ি, সাতজেলিয়া, ছোট মোল্লাখালি, লাক্সবাগান, রাঙাবেলিয়া, বালি’র মতো নোনা জলে নষ্ট হওয়া চাষের জমি থাকা দ্বীপ ও গ্রামগুলোতে পরীক্ষামূলক ভাবে বিনা কর্ষণে আলু ও পেঁয়াজ চাষ শুরু হয়েছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ক্যানিংয়ের কেন্দ্রীয় মৃত্তিকা লবণাক্ততা গবেষণা সংস্থা ও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে। আয়লা পরবর্তী সময়ে এই এলাকার প্রান্তিক চাষিদের ঘুরে দাঁড়ানো ও মহিলাদের কৃষিতে স্বনির্ভর করতে অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ সুন্দরবনে গবেষণামূলক কৃষিকাজে এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিতে শুরু করে।
হিউ বললেন, ‘‘আমি নিজে চাষি পরিবারের মানুষ। বাড়িতে গবাদি পশু প্রতিপালন করা হয়। সন্দরবনের জীবনসংগ্রাম বাইরে থেকে বোঝা অসম্ভব। প্রথম বার এখানে এসে এখানকার মহিলাদের স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টাকে কুর্নিশ জানাই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য গবেষক আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সুন্দরবনে প্রযুক্তি নির্ভর চাষের সম্প্রসারণের। অস্ট্রেলিয়া সরকার এই প্রচেষ্টার পাশে সবসময় আছে।’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)