রাজ্যের একেবারে প্রান্তিক স্তরের মানুষের কাছেও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে অবশ্যই ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হবে। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি এমনই বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। এ দিন শহরে এসে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে তিনি পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন। এর পরে মন্ত্রী ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’ (নাইপার)-এর নতুন ক্যাম্পাস ও উৎকর্ষ কেন্দ্র তৈরির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যান পানিহাটিতে।
রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী স্পষ্ট জানান, পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষের জন্য উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে অবশ্যই আয়ুষ্মান ভারতের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা পরিষেবা যাতে রাজ্যের সকলের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি।’’ এ দিন আয়ুষ্মান ভারত সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, জাতীয় যক্ষ্মা নির্মূলকরণ প্রকল্প, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পের তহবিল, প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন (পিএম-এবিএইচআইএম), টেলিমেডিসিন পরিষেবা, রাজ্যের ডাক্তারি শিক্ষা এবং সিকল সেল অ্যানিমিয়া দূরীকরণ প্রকল্পের পর্যালোচনাও করেন মন্ত্রী। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে রাজ্যে চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে বরাদ্দকৃত অর্থের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। জাতীয় যক্ষ্মা নির্মূলকরণ প্রকল্পের জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় এ পর্যন্ত কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন রাজ্যের ২২৩টি ব্লক স্বাস্থ্য ইউনিট গড়ে তোলার জন্য ১৮০ কোটি ১২ লক্ষ টাকা এবং ৭১৯টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ার জন্য ২৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
অন্য দিকে, পানিহাটিতে বেঙ্গল কেমিক্যালের ২০ একর জমিতে নাইপারের নতুন ক্যাম্পাস তৈরিতে ৭৮ কোটি এবং উৎকর্ষ কেন্দ্রের জন্য ১০০ কোটি টাকা কেন্দ্র বরাদ্দ করেছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘উৎকর্ষ কেন্দ্র থেকে যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল শিক্ষার প্রসার ঘটবে, তেমনই নতুন ক্যাম্পাস থেকে উন্নত গবেষণা হবে, বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে উঠবে।’’ তিনি আরও জানান, ফার্মা ক্ষেত্রে কাজ করতে চাওয়া আগামী প্রজন্মের কাছে এই কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ফার্মা ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য পড়ুয়ারা রাজি থাকলেও পরিকাঠামোর অভাবে তা সম্ভব হয় না। তার জন্যই প্রতিটি সেক্টরে একটি করে নাইপার-কে উৎকর্ষ কেন্দ্র করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলায় মেধার অভাব নেই। দেশের যুবকদের যাতে বাইরে যেতে না হয়, তার জন্যই এমন প্রচেষ্টা।’’ এ দিন ভিত্তিপ্রস্তরের ফলকে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ ও সাংসদ সৌগত রায়ের নাম থাকলেও তাঁরা ছিলেন না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)