Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Baguiati Students Murder

বসিরহাট মর্গে পড়ে ছিল দুই স্কুলছাত্রের দেহ, পুলিশের জানতে লেগে গেল ১৩ দিন? উঠছে আরও অনেক প্রশ্ন

গত ২২ অগস্ট থেকে বাগুইআটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুই ছাত্র নিখোঁজ ছিল। পরিবারের অভিযোগ, সে দিনই থানায় অভিযোগ করা হয়। যদিও পুলিশের দাবি, অভিযোগ জানানো হয় গত ২৪ অগস্ট।

বাগুইআটিতে জোড়া খুনে প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা!

বাগুইআটিতে জোড়া খুনে প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা! নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫৭
Share: Save:

বাগুইআটি থেকে দুই ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল গত ২৪ অগস্ট। তার পর ১৩ দিন পেরিয়েছে। মঙ্গলবার পাওয়া গিয়েছে অতনু দে-এর দেহ। অন্য একটি দেহ শনাক্তকরণের কাজ চলছে। তবে সেটিও আর এক অপহৃত কিশোর অভিষেকের বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বাগুইআটি-কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। পর পর দুই কিশোরের দেহ উদ্ধারের পরও বসিরহাট জেলা পুলিশের সন্দেহ হল না কেন? যেখানে কয়েক কিলোমিটার দূরে বাগুইআটি থানায় দুই নাবালকের নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে, সেখানে কী ভাবে ১০-১২ দিন ধরে বসিরহাট মর্গেই পড়ে থাকল দুই কিশোরের দেহ। উঠছে এমনই নানা প্রশ্ন।

গত ২২ অগস্ট থেকে বাগুইআটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুই কিশোর নিখোঁজ ছিল। হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির দুই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, তারা সেই দিনেই থানায় অভিযোগ জানান। যদিও পুলিশের দাবি, অভিযোগ জানানো হয়েছে ২৪ অগস্ট। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অপহরণের পরে পরেই গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয় দু’জনকেই। আঙুল উঠেছে প্রতিবেশী সত্যেন্দ্র চৌধুরীর দিকে। এ পর্যন্ত শামিম আলি, শাহিন আলি, দিব্যেন্দু দাস নামে তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। মূলচক্রী সত্যেন্দ্র এবং আর এক জন ফেরার। কিন্তু তার পরও পুলিশের তদন্ত এবং তাদের ভূমিকার একাধিক ফাঁকফোকর দেখছে মৃতদের পরিবার।

অতনু এবং অভিষেককে খুঁজে না পাওয়ার অভিযোগ যদি ২৪ অগস্টেই পেয়ে থেকে পুলিশ, তাতেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, অভিযোগ পাওয়ার আগেই খুন হয়ে গিয়েছিল। যদিও তা অনেক পরে পুলিশ জানতে পারে। মঙ্গলবার দুপুরে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ওই দুই কিশোর গত ২২ অগস্ট থেকে নিখোঁজ হলেও পুলিশের কাছে ২৪ অগস্ট একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগ দায়েরের ১২ দিনের মাথায় প্রথম গ্রেফতারি হয়েছে। গ্রেফতার হন জনৈক অভিজিৎ বসু। তাঁকে জেরা করে জানা যায়, ২২ অগস্ট সত্যেন্দ্র এবং আরও কয়েক জন বাসন্তী হাইওয়ের উপর চলন্ত গাড়ির মধ্যে দুই কিশোরকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়। তার পর, কিছু দূর এগিয়ে তারা নয়নজুলিতে আলাদা আলাদা জায়গায় দু’টি দেহ ফেলে দেওয়া হয়। সবই পুলিশ জানতে পেরেছে সোমবার। এর পরে পুলিশের পক্ষে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব থানা এলাকায় খোঁজ শুরু হয়। জানা যায়, বসিরহাট মর্গে তিনটি অশনাক্ত দেহ রয়েছে। যার মধ্যে দু’টিকে দুই কিশোরের দেহ বলে অনুমান করে পুলিশ। এই প্রেক্ষিতে আরও একটি প্রশ্ন উঠে আসছে।

কোনও নিখোঁজ মামলা হলে আশপাশের থানাগুলিতেও খবর পৌঁছয়। সেখানে কী ভাবে অজ্ঞাতপরিচয় দু’টি কিশোরের দেহ পেয়েও বসিরহাট থানার পুলিশের কোনও সন্দেহ হল না! বিস্ময় প্রকাশ করছেন মৃতদের আত্মীয়রা। তা হলে কি বাগুইআটি থানার তরফে আশপাশের থানাগুলির কাছে এই নিখোঁজের খবর দেওয়া হয়নি? পুলিশ সূত্রে খবর, একটি দেহ পাওয়া যায় ন্যাজাট থানা এলাকায়। সেটা ২৩ অগস্ট। দু’দিন পর অর্থাৎ, ২৫ অগস্ট হাড়োয়া থানা এলাকায় আরও একটি দেহ মেলে। যদিও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে সবই করা হয়েছিল। তবে ওই দুই ছাত্র যে খুন হয়ে যেতে পারে তা ধৃত অভিজিতকে জেরার আগে ভাবতেই পারেনি পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baguiati Students Murder Baguiati murder case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE