Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Baguiati double murder

কেন খুন দুই কিশোর, সিআইডি অন্ধকারেই

সতেন্দ্রকে জেরা করার পরে তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার দিন দু’টি দেহ ফেলে রেখে অভিযুক্তেরা চলে আসে কেষ্টপুরে। সেখানে খুনে ব্যবহার করা ভাড়ার গাড়ি ফেরত দেয় সত্যেন্দ্র।

অন্ধকারে সিআইডি।

অন্ধকারে সিআইডি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪২
Share: Save:

নাকের ডগায় ঘোরাফেরা করা মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হিমশিম খেয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সে যদিও বা ধরা পড়ল, তার তিন দিন পরেও, রবিবার বিকেল পর্যন্ত তদন্তকারীদের কাছে পরিষ্কার নয়, বাগুইআটির দুই কিশোর খুনের কারণ কী। ওই ঘটনার পিছনে আর কেউ রয়েছে কি না, তা-ও স্পষ্ট হয়নি। কেন? কারণ হিসাবে গোয়েন্দারা বলছেন, যে-ভাবে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরি একই কথা বার বার বলে চলেছে, তা থেকে মনে হতেই পারে যে, অন্য কেউ বা কেউ কেউ এর পিছনে রয়েছে এবং যাকে বা যাদের বাঁচাতে চাইছে সে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জেরার মুখে সত্যেন্দ্র এখনও দাবি করছে, মোটরবাইক কেনার জন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল কিশোর অতনু দে। সতেন্দ্র সেই টাকা ফেরত দিতে না-পারায় তাকে অপমান এবং বিভিন্ন বিষয়ে ব্ল্যাকমেলিং করছিল অতনু। তাতে ক্ষিপ্ত হয়েই সে তাকে খুন করেছে বলে জানায় সত্যেন্দ্র।

তদন্তকারীদের কথায়, জেরার মুখে সত্যেন্দ্র পেশাদারদের মতো আচরণ করছে। যে-ভাবে গ্রেফতারি এড়াতে পেশাদারি কায়দায় সে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিল, ঠিক সেই কায়দায় জেরায় সিআইডি-র তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করে চলছে ওই অভিযুক্ত। এক সিআইডি-কর্তা জানান, সব সম্ভাবনা খোলা রাখা হয়েছে। খুনের আগে এবং পরে সতেন্দ্র কার কার সঙ্গে কী ভাবে যোগাযোগ করেছিল, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। তা জানতে পারলে নিশ্চিত হওয়া যাবে, এর পিছনে আর কেউ রয়েছে কি না বা কারও নির্দেশে সে ওই জোড়া খুন করেছে কি না।

বাগুইআটির দুই কিশোর অতনু দে ও অভিষেক নস্কর গত ২২ অগস্ট নিখোঁজ হয়। তাদের গাড়িতে করে নিয়ে গিয়েছিল সত্যেন্দ্র। প্রায় ১৩ দিন পরে বসিরহাট মর্গে দুই কিশোরের দেহ শনাক্ত হয়। প্রথমে ভাড়াটে খুনি-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে পাকড়াও করা হয় সত্যেন্দ্রকে।

সতেন্দ্রকে জেরা করার পরে তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার দিন দু’টি দেহ ফেলে রেখে অভিযুক্তেরা চলে আসে কেষ্টপুরে। সেখানে খুনে ব্যবহার করা ভাড়ার গাড়ি ফেরত দেয় সত্যেন্দ্র। তার পরে বাকি অভিযুক্তদের টাকার জন্য সেখানে দাঁড়াতে বলে পালিয়ে যায় সে। একটি মোটরবাইক বুক করে সোজা সে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দিকে চলে যায়। পরে সে ফিরে এসে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকে। তদন্তকারীরা সত্যেন্দ্রের দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হলেও এখনও দুই কিশোরের এক জনের ফোনের সন্ধান পাননি গোয়েন্দারা।

সিআইডি জানিয়েছে, ঘটনার দিন একটি নয়, দু’টি গাড়িতে ভাগ হয়ে অভিযুক্তেরা এসেছিল। যে-গাড়িটি আটক হয়েছে, সেটি ছাড়াও আরও একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়। তার চালকের খোঁজ চলছে। তবে দ্বিতীয় গাড়িটির সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। ওই দ্বিতীয় গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE