বাংলাদেশে নতুন করে শুরু হিংসা নিয়ে তরজা শুরু হল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও।
প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে এনে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্য দিকে, বিজেপিকে ইঙ্গিত করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই এ রাজ্যের রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনকে সামনে আনার চেষ্টার প্রেক্ষিতে এ রাজ্যে সতর্ক থাকার কথা বলেছে সিপিএম।
একটি খুন ও তা ঘিরে উদ্ভূত অশান্তির জেরে এ রাজ্যের রাজনীতিতেও চর্চায় ফিরেছে বাংলাদেশ। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসআইআর-এর আবহে সেই প্রসঙ্গ এসেছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্যে। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে দলীয় কর্মসূচিতে এসে শুক্রবার শুভেন্দু বলেন, ‘‘হিন্দুদের উপরে এ অত্যাচার মেনে নেওয়া যাবে না। ওঁরা ( হিন্দুরা) আমাদের আত্মীয়। আমরা আগে হিন্দু, তার পরে রাজনীতি।’’ মেরুকরণের রাজনীতিতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘১৯৭১-এ পাকিস্তানে যাদের পরাজয় হয়েছিল, তারা আবার জেগে উঠেছে। এরা পাকিস্তানি। ভারতকে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’’
বাংলাদেশের হিংসার প্রেক্ষিতে হিন্দু-মুসলিম প্রসঙ্গ চর্চার সমালোচনা করেছে তৃণমূল। বাংলাদেশের সূত্রে বিজেপির একাধিক নেতা সংবাদ ও সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের রাজনীতির সমালোচনা করেছেন। তার জবাবে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘বিজেপির কয়েক জন নেতা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তির যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তা বিপজ্জনক।’ তাঁর কথায়, ‘নির্বাচনের আগে বিজেপি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে’। বাংলাদেশে হিংসার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তুলনা টেনে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয় এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে ‘উস্কানি’ দিচ্ছেন, এই মর্মে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তৃণমূলের নেতা তন্ময় ঘোষ।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ধর্ম নিয়ে রাজনীতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘ধর্মাশ্রিত, বিভাজনের রাজনীতি করলে, গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থা ধ্বংস করলে কী হয়, সেটা বাংলাদেশে দেখছি। এখন ভারত, পশ্চিমবঙ্গেও দেখছি। পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের দূরত্ব কত? ধর্মকে ব্যবহার করে হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি হচ্ছে!’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)