Advertisement
১১ মে ২০২৪

ইস্কোর দুর্ঘটনায় মৃত আরও এক, দু’জন সাসপেন্ড

ইস্কোয় গলা লোহা ছিটকে শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হল সংস্থার দুই আধিকারিক ও সংশ্লিষ্ট ক্রেন চালকের বিরুদ্ধে। তদন্ত রিপোর্টে দোষ প্রমাণ হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ০০:৫৯
Share: Save:

ইস্কোয় গলা লোহা ছিটকে শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হল সংস্থার দুই আধিকারিক ও সংশ্লিষ্ট ক্রেন চালকের বিরুদ্ধে। তদন্ত রিপোর্টে দোষ প্রমাণ হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে রবিবার রাতে মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায় জখম আরও এক শ্রমিকের। ফলে, মোট চার জনের মৃত্যু হল। সোমবার সংস্থার ইডি (ওয়ার্কস) আর পি মণ্ডল কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শ্রমিক-নিরাপত্তার বিষয়ে বৈঠক করেন।

শনিবার ভোর ৪টে নাগাদ ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের স্টিল মেল্টিং বিভাগে ক্রেনে করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে পাত্র উল্টে গলা লোহা ছিটকে পড়ে। জখম হন ন’জন ঠিকা শ্রমিক। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় দু’জনের। আহতদের মধ্যে তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি চার জনকে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে রবিবার সকালে মারা যান এক জন। রাতে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় (২৫) নামে আরও এক জনের মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি বার্নপুরের সূর্যনগর কলোনি এলাকায়।

দুর্ঘটনার পরেই তদন্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার সুবীর মণ্ডল ও ক্রেন চালক সিদ্ধার্থ সুরিয়াকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাজে যোগ না দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংস্থার ডিজিএম গোবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘটনার বিবরণ লিখিত ভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ও ইস্পাতমন্ত্রীর দফতর থেকে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে বিশদ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

শনিবার দুর্ঘটনার পরেই শ্রমিক-কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নানা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। কর্তাদের সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেন শ্রমিক নেতারা। আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় নেতা হরজিৎ সিংহের অভিযোগ, ‘‘দুর্ঘটনা যেখানে ঘটেছে, সেই জায়গা এতটা অপরিসর যে গলা লোহার পাত্র নিয়ে যাওয়া খুব বিপজ্জনক। নিরাপত্তা আধিকারিকের ভূমিকা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ওই জায়গায় কাজ বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছি।’’

ইস্কো সূত্রের খবর, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই জায়গায় কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মৃত শ্রমিকদের নিকট পরিজনকে চাকরির ব্যবস্থা ও পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে অনুদান দিয়েছে সংস্থা। শ্রমিক-নিরাপত্তা নিয়ে এ দিন ইস্কো অনুমোদিত কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্থার ইডি (ওয়ার্কস)। দূর্ঘটনা রোধে আরও কী উপায় নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে শ্রমিক নেতাদের মতামত নেন কর্তৃপক্ষ। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশোগোপাল চৌধুরী জানান, শনিবারের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে তাঁরা ইস্পাতমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ISCO Accident Death Suspend
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE