Advertisement
E-Paper

গঙ্গাস্নানে যাওয়ার পথে বাস উল্টে মৃত বর্ধমানের ১৩

বাস ভাড়া করে গঙ্গাস্নানের জন্য রওনা হয়েছিলেন শ’তিনেক মানুষ। বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থেকে নদিয়ার নবদ্বীপের পথে রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস নয়ানজুলিতে উল্টে প্রাণ হারালেন একই গ্রামের ১২ জন। মৃত মোট ১৩ জন, আহত ৩৯। শুক্রবার সকালে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলা বাসটি বর্ধমানের মির্জাপুরের কাছে বাঁকের মুখে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে উল্টে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৫
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। খন্ডঘোষের খুদকুড়ি গ্রামে উদিত সিংহের তোলা ছবি।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। খন্ডঘোষের খুদকুড়ি গ্রামে উদিত সিংহের তোলা ছবি।

বাস ভাড়া করে গঙ্গাস্নানের জন্য রওনা হয়েছিলেন শ’তিনেক মানুষ। বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থেকে নদিয়ার নবদ্বীপের পথে রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস নয়ানজুলিতে উল্টে প্রাণ হারালেন একই গ্রামের ১২ জন। মৃত মোট ১৩ জন, আহত ৩৯।

শুক্রবার সকালে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলা বাসটি বর্ধমানের মির্জাপুরের কাছে বাঁকের মুখে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই ক’জন মারা যান। বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানোর পরে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত ছ’জনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালো পাঠানো হয়।

রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্প ও প্রাণিসম্পদবিকাশমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আহতদের বিনামূল্যে চিকিত্‌সারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’’

যদিও মন্ত্রীর এই ঘোষণায় বেধেছে বিতর্ক। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের দাবি, ‘‘ক্ষতিপূরণের কথা জেলাশাসক বলতেই পারেন। কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ থাকাকালীন মন্ত্রী এ ধরনের ঘোষণা করতে পারেন না।’’ নির্বাচন কমিশনে বিষয়টি জানানো হবে বলে রবীনবাবু জানান। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে এমন নতুন প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায় না, যা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, বিশদে না জেনে মন্তব্য করব না।’’

তবে স্বপনবাবুর জবাব, ‘‘ওই এলাকায় পুরভোট নেই। তাই এই সাহায্য করায় ভোট-বিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া, মৃতদের পরিবারগুলি এতটাই গরিব যে তাঁদের সাহায্য করার সময় বিধি ভঙ্গ হচ্ছে কি না, তা মাথায় রাখা হয়নি।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতি বছরই চৈত্রের শেষে খণ্ডঘোষের খুদকুড়ি গ্রামে রাঘবেশ্বর মন্দিরে মেলা শুরুর আগে এলাকাবাসী বাস ভাড়া করে গঙ্গাস্নানে যান। সেই মতো এ বারও তিনটি বাস বোঝাই করে নবদ্বীপ যাচ্ছিলেন তাঁরা। আহত যাত্রী দিলীপ সাঁতরা, রাধারানি সাঁতরাদের অভিযোগ, ‘‘বর্ধমান-নাদনঘাট রাস্তা ধরে বাস খুব জোরে ছুটছিল। অন্য বাসের সঙ্গে রেষারেষিও চলছিল। চালককে বারবার নিষেধ করছিলাম। কিন্তু সে শোনেনি।” মির্জাপুরে বাঁকের কাছে চার বার ডিগবাজি খেয়ে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে দিলীপবাবুদের বাসটি। চালক পালান। আশপাশের লোকজন ট্রাক্টর দিয়ে বাসটিকে তুলে যাত্রীদের বের করেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে কমল দাস (৪৫), সনৎ দাস (২২), আকাশ দাস (১০), উদয় কারক (৫৫), হৃদয় কারক (৪৫), কেষ্ট চক্রবর্তী (৫০), মদন প্রামাণিক (৪৭), শুক্লা চক্রবর্তী (১২), সনৎ চক্রবর্তী (৭৪), উত্তম মালিক (৪৫), তন্ময় দাস (২২) ও লক্ষ্মীনারায়ণ মালিক (৫৫) খুদকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। রিন্টু দাসের (৩২) বাড়ি বর্ধমানের সদরঘাটে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘বাসমালিক সংগঠনগুলিকে ডেকে বাসের ছাদে যাত্রী তোলা নিয়ে সতর্ক করা হবে।’’ পুণ্যস্নানে যাওয়ার পথে এক সঙ্গে এত জনের মৃত্যুর পরে থমথমে হয়ে গিয়েছে খুদকুড়ি গ্রাম। মেলার প্রস্তুতি বন্ধ। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই বর্ধমানে চলে আসেন গ্রামের অনেকে।

13 passengers dead burdwan bus accident state news dangerous bus accident khandaghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy