Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

থানায় ঢুকে গোলমাল, কালনায় গ্রেফতার ১৫

বধূহত্যায় অভিযুক্তদের সকলে ধরা পড়েনি কেন, এই প্রশ্ন তুলে থানায় ঢুকে অশান্তি পাকানোয় ১৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে কালনায় পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায় পুলিশ। তাতে সাত জন জখম হন বলে অভিযোগ। হামলায় চার জন কনস্টেবল জখম হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জনতাকে ছত্রভঙ্গ করছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

জনতাকে ছত্রভঙ্গ করছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০১:৩৫
Share: Save:

বধূহত্যায় অভিযুক্তদের সকলে ধরা পড়েনি কেন, এই প্রশ্ন তুলে থানায় ঢুকে অশান্তি পাকানোয় ১৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে কালনায় পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায় পুলিশ। তাতে সাত জন জখম হন বলে অভিযোগ। হামলায় চার জন কনস্টেবল জখম হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনার বালির বাজার এলাকায় ইসমাতারা পারভিন নামে এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর স্বামী-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করা হয়। মৃতার বাবা, পূর্বস্থলীর দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের গোকর্ণ গ্রামের ওয়াজেল মণ্ডল কালনা থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার দিন অভিযুক্তদের বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি তিন জন পলাতক।

এ দিন দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ গোকর্ণ গ্রাম থেকে দু’টি ট্রাক্টর ও গাড়িতে করে শ’দেড়েক লোক কালনা থানায় পৌঁছয়। পুলিশ জানায়, তাদের মধ্যে জনা কুড়ির একটি দল থানার ভিতরে ঢুকে পুলিশকর্মীদের কাছে জানতে চায়, খুনে অভিযুক্ত বাকি তিন জনকে এখনও ধরা হচ্ছে না কেন। পুলিশ তাদের জানায়, ওসি এখন নেই। কোনও অভিযোগ থাকলে জনা চারেকের প্রতিনিধি দল দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। বাকিদের বেরিয়ে যেতে হবে। অভিযোগ, এর পরেই ওই বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ শুরু করে। পুলিশকর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। জিনিসপত্র ভাঙচুর, বাইরে থেকে ইট-পাটকেলও ছোড়া হয়। থানার সামনে রাখা কয়েকটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্রাইম কনফারেন্সে যোগ দিতে এ দিন এসডিপিও (কালনা) ইন্দ্রজিৎ সরকার, সিআই রাকেশ মিশ্র এবং কালনার ওসি দীপঙ্কর সরকার বর্ধমানে গিয়েছিলেন। কালনা থানা সূত্রে জানা যায়, কর্তারা বাইরে থাকায় এমন হামলার মুখে পড়ে কী ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সে নিয়ে পুলিশ ধন্দে পড়ে যায়। তবে খবর পেয়ে এক আধিকারিক ফোনে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেন। এর পরেই থানা থেকে লাঠি হাতে বেরিয়ে আসেন পুলিশকর্মীরা। জনতাকে ধাওয়া করে সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুন বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন, লিচুতলা এলাকা থেকে গোকর্ণের ১৫ জনকে গ্রেফতার করে আনে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, থানায় গোলমাল পাকানোর ঘটনায় সাত জন নেতৃত্ব দিয়েছিল, যাদের মধ্যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। তার খোঁজ চলছে। পুলিশের লাঠিতে এক চিত্র সাংবাদিক-সহ কয়েক জন জখম হন বলে অভিযোগ।

পুলিশের লাঠি চালানো নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা প্রণব রায়চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘যে ভাবে এলাকার একটি মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে তাতে বাসিন্দারা মর্মাহত। অভিযুক্তদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না তা জানতে তাঁরা থানায় গিয়েছিলেন। কারও হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। পুলিশ বেপরোয়া লাঠি চালিয়ে ঠিক করেনি।’’

পুলিশের যদিও দাবি, পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠি চালানো ছাড়া উপায় ছিল না। ঘটনার পরেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে বর্ধমান থেকে তড়িঘড়ি কালনায় ফেরেন সিআই এবং ওসি। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় না হাঁটলে উর্দির সম্মান থাকত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE