আক্রান্ত: হাসপাতালে জখম দম্পতি। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করায় কাঁকসায় পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী ও তাঁর বোনকে হেনস্থা, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক যুবক ও তার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, বৃহস্পতিবার রাতে মদ্যপ যুবকদের বিরুদ্ধে দোকানে চড়াও হয়ে প্রৌঢ় দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে। আক্রান্ত দম্পতির পরিবারের দাবি, একটি রাস্তা তৈরিতে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণেই দু’জনকে আক্রান্ত হতে হয়েছে।
বেনাচিতির নতুনপল্লি জি ব্লকে দোকান রয়েছে রবীন সাহা ও দুর্গাদেবী নামে এক দম্পতির। তাঁদের ছেলে মিলনবাবু শুক্রবার সকালে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দোকানঘরেই ছিলেন তাঁর বাবা-মা। অভিযোগ, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দোকানের সামনেই রবীনবাবুকে মদ্যপ অবস্থায় ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন বাপি রায় ও মদন রায় নামে এলাকারই দু’জন। অভিযোগ, দুর্গাদেবীকেও দোকান থেকে টেনে বের করে মারধর ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। মিলনবাবুর আরও অভিযোগ, লুঠ করা হয়েছে দোকানে থাকা নগদ টাকাও। আক্রান্ত দু’জনকেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
কেন এই হামলা? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ায় পুরসভা একটি রাস্তা তৈরি করছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রাস্তা তৈরিতে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রীর মান খুবই খারাপ। ওই দিন সন্ধ্যায় পাড়ার একটি আড্ডায় রবীনবাবু রাস্তা তৈরিতে খারাপ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের প্রসঙ্গটি তোলেন। দুর্গাদেবীর ভাই সমীরবাবুর অভিযোগ, ‘‘সম্ভবত ওই আড্ডারই কেউ বাপি, মদনকে বিষয়টি জানান। তার পরেই এই হামলা।’’
কিন্তু রাস্তা তৈরির বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় ওই দু’জনের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কেন? বাসিন্দাদের একাংশের মতে, অভিযুক্ত দু’জনেই এলাকায় শাসক দল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই সূত্রেই পুরসভা-সহ সরকারের কোনও কাজ নিয়ে প্রশ্ন করলেই ওই দু’জন গোলমাল করে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। অভিযুক্ত বাপিবাবু এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘ওই পরিবারটি আগে সিপিএম করত। এখন বিজেপি-তে যোগ দিয়েছে। তাই রাস্তা তৈরির বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের বদনাম করা হচ্ছে।’’ যদিও দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই রাস্তা তৈরি করা হয়। তার পরেও অভিযোগ থাকলে পুরসভায় জানাতে পারেন বাসিন্দারা।’’
অভিযুক্ত বাপিবাবু অবশ্য নিজেকে ৬৯ নম্বর বুথের তৃণমূলের কনভেনার দাবি করে বলেন, ‘‘মারধর করা হয়নি। একটা গোলমাল হয়েছে। রবীনবাবু হয়ত পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছেন। আমার মা’ও আক্রান্ত হয়েছেন।’’ যদিও ওই এলাকার তৃণমূল নেতা তথা দলের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি রাজু সিংহের দাবি, ‘‘রাস্তা নিয়ে দু’টি পরিবারের গোলমাল হয়েছে। দলের কোনও যোগ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy