E-Paper

‘এক দিনের প্রধান শিক্ষক’ খুদে ঈশানী

ঈশানীর মা পরিচারিকার কাজ করেন। বাবা নেই। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী পাওয়ার হাউসপাড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫ ০৫:৫৬
বর্ধমানের স্কুলে।

বর্ধমানের স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।

প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে খুদে পড়ুয়া। নেমপ্লেটে জ্বলজ্বল করছে তার নাম। পাশে দাঁড়িয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলের কী কী সমস্যা রয়েছে শুনছেন। এই ভাবেই মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের শ্যামসায়ের শ্রী রামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যাপীঠে ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়ে এক দিনের জন্য প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ঈশানী হেলা। সেরা পড়ুয়া হওয়ার এই পুরস্কারে অত্যন্ত উৎফুল্ল সে।

ঈশানীর মা পরিচারিকার কাজ করেন। বাবা নেই। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী পাওয়ার হাউসপাড়ায়। নানা বাধা পেরিয়েও পড়াশোনা, খেলাধুলা ও স্কুলের অন্য কর্মকাণ্ডে ঈশানীর আগ্রহে খামতি নেই। এ বার তৃতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে উঠতে সে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। ক্যুইজ়ে প্রথম হয়েছে, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতেও ভাল ফল করেছে। স্কুলের প্রার্থনা পরিচালনা থেকে শুরু করে মিড-ডে মিলের কাজেও তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলে দাবি করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

এ দিন ‘এক দিনের প্রধান শিক্ষক’ হয়ে ঈশানী স্কুলের পোশাকের বদলে দিদিমণিদের মতো শাড়ি ও হাতে ঘড়ি পরে স্কুলে এসেছে। স্যরের চেয়ারে বসেছে। প্রথম শ্রেণির একটি ক্লাস নিয়েছে। মিড-ডে মিলের চালের খরচও হিসেবের খাতায় তুলেছে। তদারকি করেছে স্কুলের অন্য সমস্ত কাজ। সব শেষে শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেছে। বৈঠকে সে জানিয়েছে, স্কুলের প্রার্থনা শেষে অভিভাবকদের দ্রুত স্কুল চত্বর ত্যাগ করা ও বাথরুম পরিষ্কার রাখার প্রয়োজনীয়তা।

ঈশানীর নিজের পর্যবেক্ষণ থেকে জানায়, স্কুলের প্রার্থনা হয়ে গেলেও অভিভাবকেরা অনেক সময় স্কুল চত্বর ছেড়ে যেতে চান না। তাঁরা শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ঢুকে বাচ্চাদের সঙ্গেই বসে থাকেন। এই বিষয়টি পরিবর্তনের জন্য সে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বলেছে। পাশাপাশি, শৌচালয়গুলি আরও ভাল করে পরিষ্কার রাখরও কথা জানিয়েছে সে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পলাশ চৌধুরী, এই সমস্যাগুলি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক বলেন, “এক জন শিশুকে আগামী কালের যোগ্য নাগরিক করে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের। প্রাথমিক স্তর থেকেই তার বীজ বপন করতে আমরা এই রকম উদ্যোগ নিয়েছি। এই কর্মসূচি অন্যদেরও উৎসাহিত করবে।” ঈশানী জানিয়েছে, এ দিন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে দারুণ খুশি। বড় হয়ে সেও প্রধান শিক্ষক হতে চায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy