Advertisement
E-Paper

‘কলকাতায় বাড়ি, নাম অনুপম রায়’, হবু স্ত্রীর ১৮ ভরি সোনা, ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়ে ‘পলাতক’, মাথায় হাত বর্ধমানের পরিবারের

পুলিশ সূত্রে খবর, একটি পরিচিত ঘটকালির ওয়েবসাইটে বর্ধমান শহরের বছর বত্রিশের এক যুবতী অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় অনুপম রায় নামে এক ব্যক্তির। ঘটকালির ওয়েবসাইটে তিনি নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ‘এ রায়’ বলে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:১৩
Cyber Fraud Case

—প্রতীকী চিত্র।

নাম এবং পরিচয় বদলে ‘হবু স্ত্রী’ এবং তার পরিবারের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ হুগলির এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তের খোঁজ নিতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ইতিমধ্যে তিনি অন্য একটি প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন!

পুলিশ সূত্রে খবর, একটি ঘটকালির ওয়েবসাইটে পরিচয় হয়েছিল দুই যুবক-যুবতীর। মেয়েটির বাড়ি বর্ধমানে। পাত্র জানান, তাঁর বাড়ি কলকাতায়। বিয়ের কথাও প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। তার পরেই শুরু হয় প্রতারণা!

অভিযোগ, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ‘হবু স্ত্রী’-র ১৮ ভরি সোনার গয়না এবং তার পরিবারের প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অনুপম রায় ওরফে শেখ মহম্মদ জামির আব্বাস। বিভিন্ন সূত্র ধরে অভিযুক্তের হদিস পায় বর্ধমান সাইবার থানা। কিন্তু পরে তারা জানতে পারে হুগলির গ্রামীণ জেলা পুলিশের সাইবার থানায় একটি মামলার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ওই অভিযুক্ত পুলিশের হেফাজতে। তাঁকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানোর জন্য রবিবার সাইবার থানার তদন্তকারীরা আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’র কারণে আবেদন খারিজ করে দেন সিজেএম। অভিযুক্তকে গ্রেফতারির পর আবেদন শোনা হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রে খবর, একটি পরিচিত ঘটকালির ওয়েবসাইটে বর্ধমান শহরের বছর বত্রিশের এক যুবতী অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় অনুপম রায় নামে এক ব্যক্তির। ঘটকালির ওয়েবসাইটে তিনি নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ‘এ রায়’ বলে। জানিয়েছিলেন, বাড়ি কলকাতার ভবানীপুর এলাকায়। ব্যবসা করেন। দু’জন ফোন নম্বর দেওয়া-নেওয়া করেন। নিয়মিত ফোনে কথোপথন হত। হোয়াট্‌সঅ্যাপে যোগাযোগ রাখতেন তাঁরা। কিছু দিনের মধ্যে যুবতীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন অভিযুক্ত। ওই যুবতী তখন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁর কথা বলিয়ে দেন।

এ দিকে বিয়ের কথাবার্তা এগোতেই অনুপম জানান, তিনি আয়কর বিষয়ক কোনও গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে তিনি চিন্তিত। কারণ, মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। তিনি এ-ও জানান, আয়কর সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় ‘হবু স্ত্রী’র কাছে অর্থসাহায্য চান। কিন্তু যুবতী জানান, তাঁর কাছে এত টাকা নেই। অনুপম তখন জানতে চান, সোনার গয়না আছে কি না। ‘হ্যাঁ’ বলার পর এক জনকে পাঠিয়ে ‘হবু স্ত্রী’-র ১৮ ভরি সোনার গয়না নেন তিনি।

কিছু দিন পরে বোনঝির ‘হার্টের সমস্যা হয়েছে’ বলে আবার টাকা চান অনুপম। তখনও সাহায্যে এগিয়ে আসে যুবতীর পরিবার। গাড়িচালকের মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা দেন তাঁরা। এর পর বোনের মেয়ে মারা গিয়েছে জানিয়ে নার্সিংহোমের বিল মেটানোর নাম করে আরও ১৮ লক্ষ টাকা নেন বলে দাবি। এর পর নানা অজুহাতে আরও ৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেন। সেই টাকা একটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। কিন্তু তার কিছু দিন পর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় অনুপমের। যুবতী এবং তার পরিবারের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অন্য দিকে, গত শনিবার বর্ধমানের সাইবার থানা জানতে পারে হুগলির গ্রামীণ এলাকার একটি প্রতারণার মামলায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত গ্রেফতার! ফোন নম্বরের সূত্র ধরে তাঁর পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। অভিযুক্তের আসল নাম শেখ মহম্মদ জামির আব্বাস। কলকাতা নয়, হুগলির খানাকুল থানার চক্রপুরের বাসিন্দা তিনি। হুগলির সাইবার থানার পুলিশের হেফাজত থেকে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে বর্ধমান সাইবার থানা।

Cyber fraud Crime arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy