সুরে: সাপে কাটা থেকে বাঁচতে প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
‘সাবধানে চলো পথে, আলো নিয়ে যাও/ সাপ দেখ পালিয়েছে...’— সাপে কাটা থেকে কী ভাবে বাঁচা যায়, তা নিয়ে এ ভাবেই বাউল-সুরে প্রচার চালালেন স্বপন দত্ত।
সম্প্রতি কালনা মহকুমায় সাপের ছোবলে মৃত্যু হয় আট জনের। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও পাঁচ জন। খবরের কাগজে সাপে কাটার খবরগুলি দেখে আর বসে থাকতে পারেননি বর্ধমান সদর লাগোয়া খাজা আনোয়ার বেড় এলাকার বাসিন্দা স্বপনবাবু।
একতারা হাতে কালনার বিভিন্ন এলাকায় সাপ নিয়ে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। বুধবার কালনায় আসার আগে বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব তাঁর হাতে একটি শংসাপত্র তুলে দেন।
বাউল সুরে স্বপনবাবুর এই প্রথম সচেতনতা প্রচার অবশ্য নয়। এর আগে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ডাইনি অপবাদ, ভূতের ভয়-সহ নানা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এবং ‘কন্যাশ্রী’, ‘মিশন নির্মল বাংলা’-সহ নানা বিষয় নিয়ে প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছে ৪৫ বছরের স্বপনবাবুকে। এমনকী ভোটের সময়ে মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বুথে যেতে পারেন, তা নিয়েও জেলা জুড়ে প্রচার চালিয়েছিলেন এই মানুষটি।
বুধবার সকালে বর্ধমান থেকে বাসে কালনা বাসস্ট্যান্ডে নেমেই সাপ নিয়ে প্রচার শুরু করেন স্বপনবাবু। এমনকী বিভিন্ন বাসে উঠেও তাঁকে সচেতনতামূলক গান গাইতে দেখা যায়। হাটকালনা পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকটি আদিবাসী পাড়ায় দুপুর পর্যন্ত তিনি প্রচার চালান। এর পরে তিনি পৌঁছে যান কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার দফতরে।
সাপের কামড় থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির পাশে ঝোপ-জঙ্গল না রাখা, রাতে আলো নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া, মাঠে লাঠি হাতে হাঁটা-সহ বেশ কিছু বাউল গানের মাধ্যমে তুলে ধরেন তিনি। এ দিন মহকুমাশাসক নীতিনবাবুও শংসাপত্র তুলে দেন স্বপনবাবুর হাতে। মহকুমাশাসক জানান, স্বপনবাবুর উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সাপের কামড় নিয়ে মহকুমা প্রশাসনও সচেতনেতামূলক একটি বড় আলোচনা সভার আয়োজন করতে চলেছে বলে জানান তিনি।
স্বপনবাবু বলেন, ‘‘মানুষ বিপদে পড়লেই যে কোনও এলাকায় গান বেঁধে ছুটে যাই। চেষ্টা করি মানুষকে সচেতন করতে। যত দিন বেঁচে থাকব, এ ভাবেই কাজ করে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy