—প্রতীকী চিত্র।
স্ত্রী একটি মামলায় অভিযুক্ত। তাঁর জামিন করাতে গিয়ে জেলে গেলেন স্বামী। প্রায় দু’সপ্তাহ পরে শুক্রবার জামিন পান ওই ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতকে ফাঁকি দিয়ে অন্য অভিযুক্তের হয়ে আত্মসমর্পণ করার চেষ্টা করেছিলেন নদিয়ার নৃসিংহপুরের রাজু মণ্ডল। কিন্তু বিচারকের চোখে ধরা পড়ে যান। ৭ অগস্ট থেকে কখনও জেল, কখনও পুলিশ হেফাজতে কাটান তিনি। এ দিন কালনা আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম জামসেদ শেখ রাজুর জামিন মঞ্জুর করেন। নতুন করে নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত রাজুকে সপ্তাহে দু’দিন তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে দেখা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
১ অগস্ট কালনা থানায় শেফালী মণ্ডল নামে এক মহিলা চুরি এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন আট জনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে রাজুর স্ত্রী সুস্মিতা মণ্ডল আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আসেন। এসেছিলেন রাজুও। অভিযোগ, অভিযুক্ত গোপাল রাজবংশী হাজির না থাকায় তাঁর হয়ে এসিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন রাজু। বিভিন্ন নথিপত্রে সই করেন। সন্দেহ হয় বিচারকের। বিচারক পরিচয় জানতে চাইলে রাজু জানিয়ে দেন, তিনি গোপাল নন। স্ত্রীর সঙ্গে সেরেস্তায় এসেছিলেন। সেখানেই দু’জন তাঁকে স্ত্রী যে মামলায় অভিযুক্ত সেই মামলায় অনুপস্থিত গোপালের হয়ে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দেন।
ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় আদালতে। বিচারক রাজুকে জেল হেফাজতে পাঠান। ৯ অগস্ট এই মামলার তদন্তকারী অফিসার, এক মহিলা এএসআই একটি জেনারেল ডায়েরি করেন। ১১ আগস্ট রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১৩ আগস্ট রাজুর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন মহিলা এএসআই। তদন্তভার পান উত্তম মণ্ডল নামে এক আধিকারিক। ১৯ আগস্ট রাজুকে সুন অ্যারেস্ট দেখায় পুলিশ। কেন এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি তা জানতে চার দিনের হেফাজতে নেওয়া হয় তাঁকে।
এ দিন রাজুকে আদালতে তোলা হলে দীর্ঘ সময় ধরে নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখেন বিচারক। নানা প্রশ্ন করেন। রাজু তাঁকে জানান, যে দু’জন তাকে আত্মসমপর্ণের পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে এক জন বয়স্ক। অন্যজন কমবয়সী। তাঁদেরহ চেহারারও বিবরণ দেন। অভিযুক্তদের চেনাতে পুলিশ তাঁকে একটি সেরেস্তায় নিয়ে যায়। তবে সেখানে কেউ
ছিলেন না।
রাজুর আইনজীবী চঞ্চল রাহা জানান, বিভিন্ন নথিতে যে রাজুর সই রয়েছে সেই ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত হয়নি। নতুন করে এই মামলায় কিছু সিজ করা হয়নি, কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবী অপূর্ব সাহা বলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটা উচিত হয়নি। অভিযুক্ত ভুল স্বীকার করেছেন। পুরো বিষয়টি আদালতের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।’’ কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘বার অ্যাসোসিয়েশনকে কেউ কিছু জানাননি। মৌখিক ভাবে যা শুনেছি ঘটনাটি নিন্দনীয়।’’ কালনা ল ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুজিত মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টিতে কারা জড়িত নাম জানা যায়নি। আমাদের কেউ থাকলে কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy