লাইনে দাঁড়ানো মালগাড়ির বগির নীচে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিলেন রেলকর্মী। আচমকাই মালগাড়ি চলতে শুরু করে। কোনও রকমে একটি পাইপ আঁকড়ে ঝুলে থাকেন ওই কর্মী। বিষয়টি দ্রুত নজরে পড়ায়, চালককে খবর দেন এক গার্ড। পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের রেল ইয়ার্ডে শনিবার কোনও মতে রক্ষা পান রাজীব কুমার নামে ওই রেলকর্মী। মালগাড়িটি আর কিছুক্ষণ চললে বড় বিপদ ঘটতে পারত, দাবি অনেকের।
সম্প্রতি বিহারের বারাউনি জংশনে এক কর্মী ‘কাপলিং’ খোলার সময়ে আচমকা ট্রেনের ইঞ্জিন পিছিয়ে আসে। ইঞ্জিন ও কামরার মাঝে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই রেলকর্মীর। সুরক্ষার বিষয়ে দীর্ঘদিনের ‘অবহেলা’ এমন দুর্ঘটনার কারণ বলে অভিযোগ তুলেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী-সহ অনেকেই। শনিবার অন্ডালের ঘটনাতেও উঠেছে অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ।
ইয়ার্ড সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ৫৮ বগির ওই মালগাড়ির ১৩ নম্বর বগির নীচে বসে কাজ করছিলেন রাজীব। হঠাৎ সেটি চলতে শুরু করায়, হাতের কাছে থাকা পাইপ আঁকড়ে ধরেন তিনি। পা দু’টি তুলে দেন সামনে বগির একটি অংশে। তাঁর প্রাণে বাঁচার চেষ্টা এক গার্ডের নজরে পড়ে যায়। তিনি ওয়াকিটকির মাধ্যমে খবর দিলে চালক মালগাড়ি থামান।
ঘটনার পরে রাজীব শুধু বলেন, “কোনও ভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।” ‘পূর্ব রেল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়ন’-এর সভাপতি বিভাস ঘোষের অভিযোগ, “এই কাজ চলাকালীন গাড়ির সামনে-পিছনে লাল আলো জ্বেলে রাখা বা লাল কাপড় লাগানো উচিত। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।” গার্ড ও চালকের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল বলে দাবি তাঁর।
ওই গার্ড এবং চালকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের কর্তারাও মুখ খুলতে চাননি। এক আধিকারিক শুধু বলেন, “অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)