আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বৈঠক শেষ হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মূল দুই জটের মধ্যে একটি কেটেছে বলে বৈঠকের পর দাবি করেছেন জ়েলেনস্কি। তবে ট্রাম্প তা নিয়ে কিছুটা সতর্ক। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষের সমঝোতার চূড়ান্ত পর্যায়ে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছেন। শেষ ধাপের আলোচনা চলছে। তবে এখনই শান্তিচুক্তির জন্য কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যাচ্ছে না। শীঘ্রই যুদ্ধ থামবে বলে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বিরোধের প্রধান দুই কারণ ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং ডনবাস অঞ্চলের আধিপত্য। এই দুই নিয়েই সংঘাত চলছে। ফ্লরিডার বৈঠকের পর একসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রাম্প এবং জ়েলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সেখানে জানান, তাঁর দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে সমঝোতা হয়ে গিয়েছে। কেবল ডনবাসের জট খোলা বাকি। তা হলেই যুদ্ধ পুরোপুরি থামানো যাবে। তবে এ বিষয়ে ট্রাম্প কিছুটা সতর্ক ভাবে মুখ খুলেছেন। তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে ৯৫ শতাংশ সমঝোতা সম্পূর্ণ। যেটুকু বাকি, তার জন্য ইউরোপের দেশগুলি বড় ভূমিকা নিতে চলেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁও এর পর সমাজমাধ্যমে জানান, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে কথাবার্তা এগিয়েছে।
আরও পড়ুন:
ডনবাস অঞ্চলের দখলদারি নিয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সংঘাত অনেক পুরনো। ওই অঞ্চল ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে থাকলেও তা দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে মস্কো। যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম শর্ত এই ডনবাস থেকে জ়েলেনস্কির সেনা প্রত্যাখ্যান। এখনও এ বিষয়ে জট কাটেনি। বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেন, ডনবাস নিয়ে আলোচনা সঠিক পথে এগোচ্ছে। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘এটার সমাধান এখনও হয়নি। কিন্তু আমরা সমাধানের কাছাকাছি রয়েছি। এটা খুব কঠিন একটা বিষয়।’’
ফ্লরিডার বৈঠকে যুদ্ধের চূড়ান্ত সমাধান না হলেও কথা অনেকটাই এগিয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, যুদ্ধ কবে থামবে, তা নিয়ে কোনও সময়সীমা এখনই তিনি নিশ্চিত করে বাঁধতে পারছেন না। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে স্পষ্ট হবে, আদৌ সমঝোতা হবে কি না। ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, আমরা আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। দেখি কী হয়। যদি সমাধান না হয়, তাহলে এই যুদ্ধ আরও অনেক দিন ধরে চলবে।’’ যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেনে গিয়ে বৈঠক করবেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প জানান, যদি ২৫০০০ মানুষের প্রাণ বাঁচে, তবে তিনি রাজি আছেন।
জ়েলেনস্কির সঙ্গে দেখা করার ঠিক আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। জানান, পুতিন শান্তি স্থাপনের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপকে ‘খুব ভাল এবং ফলপ্রসূ’ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।