Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
school

ফি দিতে না পারায় অপমান, অভিযুক্ত স্কুল

স্কুলের একটি সূত্রের দাবি, এ মাসের শেষ সপ্তাহে স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। সেই বাবদ ১৫০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি-র সঙ্গে প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে ১০০০ টাকা করে ‘চাঁদা’ ধার্য করা হয়েছে।

অভিযুক্ত স্কুল।

অভিযুক্ত স্কুল। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:১৬
Share: Save:

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশ অনুযায়ী একাদশ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য স্কুল ১০০ টাকা নিতে পারে। সেখানে বর্ধমান শহরের বড়বাজারের সিএমএস হাইস্কুল নোটিস দিয়ে ১১৫০ টাকা দাবি করেছে। বুধবার স্কুলের দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় এক ছাত্রের রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রের পরিবার জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর (মাধ্যমিক) ও বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছেন। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, ‘‘অভিযোগ জমা পড়েছে শুনেছি। এখনও আমার হাতে আসেনি। অভিযোগ দেখার পরে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ সিএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। নোটিসে ভুল করে ১১৫০ টাকা হয়ে গিয়েছে। সে জন্যই যত গোলমাল।’’

একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রের মা, বর্ধমান শহরের টিকরহাট বেলতলার বাসিন্দা বিউটি বিশ্বাস জেলা স্কুল পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, স্কুলের দাবি মতো টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের কাছে রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর জন্য আবেদন করেন তাঁরা। কিন্তু প্রধান শিক্ষক খুবই দূর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, ‘‘আমার স্বামী কোভিডের সময়ে কাজ হারিয়েছেন। আমি ঘরে প্রসাধনী বিক্রি করে সংসার চালাই। টাকা দিতে না পারায় আমার ছেলের রেজিস্ট্রেশন আটকে দিয়েছে স্কুল।’’ গত শনিবার বিউটি প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়ে ওই টাকা তাঁদের দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলেও জানিয়েছিলেন। ওই ছাত্রের বাবা হিরন্ময় বিশ্বাসও বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তাঁর দাবি, ‘আমরা ওই টাকা দিতে অপারগ জানার পরে প্রধান শিক্ষক জানিয়ে দেন, ছেলের রেজিস্ট্রেশন হবে না। আমরা ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দিতে বলি। তাতেও প্রধান শিক্ষক রাজি নন’।

স্কুলের একটি সূত্রের দাবি, এ মাসের শেষ সপ্তাহে স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। সেই বাবদ ১৫০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি-র সঙ্গে প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে ১০০০ টাকা করে ‘চাঁদা’ ধার্য করা হয়েছে। সব মিলিয়ে একাদশ শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১,১৫০ টাকা দিতে হচ্ছে ছাত্রদের। ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি, টিএমসিপির জেলা সভাপতি মহম্মদ সাদ্দামের দাবি, ‘‘এ ভাবে টাকা আদায়ের নোটিস সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। সরকারি নির্দেশিকার বাইরে গিয়ে এ ভাবে টাকা চেয়ে নোটিস দেওয়া খুবই অন্যায়। প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে।’’

প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘ওই ছাত্রের রেজিস্ট্রেশনে কেউ বাধা দেননি। তিন মাসে আগে ক্লাসে এক শিক্ষককে তাড়া করে ওই ছাত্র। বাকিরা আটকে দেয়। দু’দিন আগে ফের এক শিক্ষককে ফেলে দেয় ওই ছাত্র। সে সব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য অভিভাবকেরা মিথ্যা রটাচ্ছেন।’’ ওই ছাত্রকে টিসি দেওয়ার জন্য শিক্ষকেরা দাবি করেছিলেন বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school Students Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE