E-Paper

‘দ্বন্দ্ব’ না মিটিয়ে নিলে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা

‘নবজোয়ার যাত্রা’য় প্রার্থিপদ নিয়ে দলীয় স্তরে দু’রকম পদ্ধতিতে ভোট নিচ্ছে তৃণমূল। অধিবেশন মঞ্চে অঞ্চল ধরে বুথ তৈরি হচ্ছে, সেখানে নির্দিষ্ট ভোটারেরা ভোট দিচ্ছেন।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ০৯:৪১
Abhishek Banerjee

অভিষেক বন্দ্যোপাদ্যায়। — ফাইল চিত্র।

উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বীরভূম— প্রায় প্রতি জেলাতেই পঞ্চায়েতের প্রার্থিপদের জন্য ভোটাভুটি নিয়ে তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ যাত্রায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। মারপিট, ভাঙচুর, ব্যালট বাক্স লুটের মতো অভিযোগ উঠেছে। তবে পূর্ব বর্ধমানে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অভিযোগ ছাড়া ভোটাভুটিতে তেমন বিশৃঙ্খলার অভিযোগ ওঠনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, সোম ও মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান ১ ব্লকের রায়ানে ও বুদবুদের মানকরে দলের গোপন বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব বর্ধমানে চার দিনের কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন। এ ছাড়া, কয়েক জায়গায় বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের মধ্যে ‘দূরত্ব’ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েক জন নেতার কাজকর্ম নিয়ে দল বীতশ্রদ্ধ জানিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।

‘নবজোয়ার যাত্রা’য় প্রার্থিপদ নিয়ে দলীয় স্তরে দু’রকম পদ্ধতিতে ভোট নিচ্ছে তৃণমূল। অধিবেশন মঞ্চে অঞ্চল ধরে বুথ তৈরি হচ্ছে, সেখানে নির্দিষ্ট ভোটারেরা ভোট দিচ্ছেন। আর যে সব এলাকায় সভা হচ্ছে, তার পাশেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। সভায় আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। কোচবিহারের দিনহাটা থেকে বীরভূমের মুরারই, এই কর্মসূচিতে নানা জায়গায় বিশৃঙ্খলা এড়ানো যায়নি।

পূর্ব বর্ধমানে গোলমাল আটকানো গেল কী ভাবে? তৃণমূল সূত্রের দাবি, জেলার ২৩টি ব্লকের মধ্যে মেমারি ১, মন্তেশ্বর ও আউশগ্রাম ২ ব্লকে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ কারণে ব্লক কমিটি গঠন করা যায়নি। আবার বেশ কিছু জায়গায় এখনও অঞ্চল কমিটি গঠন হয়নি। রায়না, ভাতার, গলসি, জামালপুরেও ‘কোন্দল’ চরমে। প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটে তাই গোলমালের আশঙ্কা ছিল দলীয় নেতাদের। তা আটকাতে বেশ কয়েকটি বিধানসভার জন্য জেলার এক-এক জন নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। প্রত্যেক বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘সমন্বয়ও’ করেছিলেন। দলের এক নেতার দাবি, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ নানা এলাকার নেতাদের পুলিশের তরফেও গোলমাল না করার বিষয়ে হুঁশিয়ারি ছিল।’’ জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলায় আসা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই তা শৃঙ্খলা ভাঙেনি।’’

দলের একাংশের দাবি, জেলার ১৬টির মধ্যে গোটা দশেক বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের মধ্যে যে ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে, তা বুঝেছেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রের দাবি, দু’জন মন্ত্রীর এলাকায় দলে বিবাদ রয়েছে। তাই বৈঠকে অভিষেক জানান, কয়েক জনের আচরণের জন্য দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তা করতে দেওয়া যাবে না। আপসে মিটিয়ে না নিলে দল ব্যবস্থা নেবে। বৈঠকে রায়না ১, মেমারি ১ ব্লকের নেতা-নেত্রীদের উদ্দেশ্যেও দ্বন্দ্বে না জড়ানোর বার্তা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, দাবি দলের নেতাদের একাংশের। বর্ধমান ১ ব্লকের এক জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন দলীয় শৃঙ্খলা না মানার অভিযোগ উঠছে। তিনি শৃঙ্খলাবদ্ধ না হলে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, কালনা ১ ব্লক বাদ দিয়ে অভিষেকের নির্দেশমতো ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ থাকা ব্লকগুলির নেতৃত্বকে নিয়ে কাল, বৃহস্পতিবার থেকে বৈঠকে বসবেন জেলা সভাপতি। সেখানে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথেরও থাকার কথা বলে দল সূত্রে খবর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abhishek Banerjee TMC Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy