Advertisement
E-Paper

কয়লা কারবারে অভিযুক্তই ধৃত বেনাচিতির খুনে

এর আগে খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। পুলিশের খাতায় জমা পড়েছে বেআইনি কয়লা কারবার-সহ অন্য নানা অভিযোগও। বেনাচিতির মসজিদ মহল্লায় যুবকের উপরে হামলা চালাতে গিয়ে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সেই পিন্টু শর্মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
কোর্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পিন্টু শর্মাকে। রবিবার দুর্গাপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

কোর্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পিন্টু শর্মাকে। রবিবার দুর্গাপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

এর আগে খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। পুলিশের খাতায় জমা পড়েছে বেআইনি কয়লা কারবার-সহ অন্য নানা অভিযোগও। বেনাচিতির মসজিদ মহল্লায় যুবকের উপরে হামলা চালাতে গিয়ে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সেই পিন্টু শর্মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ঘটনার পরে যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়, তাদের মধ্যে পিন্টু রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। রবিবার আদালতে তোলা হলে ধৃতদের জামিন নামঞ্জুর হয়।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বেনাচিতির মসজিদমহল্লায় খুন হয়ে যান রাহুল শাহ নামে বছর পঁচিশের এক যুবক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সে দিন সকালে ওই এলাকায় এক জন সাইকেলে করে ডিপোয় কয়লা পৌঁছতে আসা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। অভিযোগ, সেই সাইকেল আরোহীর উপরে এক জন চড়াও হলে ফিরোজ আলি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রতিবাদ করেন। সে জন্য দুপুরে মোটরবাইকে চেপে ২০-২২ জন এসে ফিরোজকে মারধর করে এবং গুলি চালায়। সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে রাহুলের গলায় লাগে। তিনি হামলাকারী দলেই ছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, বেআইনি কয়লার কারবার নিয়ে অশান্তির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। ফিরোজ পুলিশকে জানান, ভিড়িঙ্গিতে কয়লার ডিপো চালায় পিন্টু। সে এবং তার দলবল এই হামলা চালিয়েছে। সে দিনই পুলিশ ভিড়িঙ্গি থেকে পিন্টু ও শ্রীনিবাস ঠাকুর এবং বেনাচিতির ধুনরা প্লট থেকে চন্দন প্রসাদ, শ্রীনগরপল্লির মদন দাসকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ২০১১-র ১৮ মে ভিড়িঙ্গি চাষিপাড়ায় গুলিতে খুন হন সিপিএম সমর্থক রামপ্রবেশ রায় ও তাঁর স্ত্রী মন্দাকলাদেবী। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুনে জড়িত বলে অভিযোগ করেছিল সিপিএম। তৃণমূল পাল্টা দাবি করে, সিপিএমের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা। পুলিশ পিন্টু ও তার দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছিল। তদন্তে পুলিশ জেনেছিল, রামপ্রবেশের কাছ থেকে জমি কিনে টাকা দেয়নি পিন্টু। বারবার টাকা চাওয়ায় পিন্টু ও তার দলবল সস্ত্রীক রামপ্রবেশকে খুন করে বলে অভিযোগ। তবে তার আগেও পিন্টুর বিরুদ্ধে অবৈধ কয়লার কারবার, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখা-সহ নানা অভিযোগ পুলিশের খাতায় উঠেছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে ভিড়িঙ্গিতে পিন্টুর ডিপো থেকে কয়েকশো মেট্রিক টন অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়। ধরা পড়ে পরে জামিনে ছাড়া পায় সে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় দশক আগে কয়লার কারবারে নামে পিন্টুর। পুলিশের একাংশ ও কিছু রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে সে কারবার চালাত। তবে গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি বদলে যায়। কমিশনারেট গঠনের পরে বেআইনি কয়লার কারবারে কিছুটা রাশ পড়ে। ট্রাক বা ম্যাটাডরে পাচারে সমস্যা হওয়ায় সাইকেলে করে কয়লা পৌঁছনো শুরু হয়। সে জন্য কিছু দিন ‘ধীরে চলো’ নীতি নিতে হয় অনেক কারবারিকে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কয়েক মাস আগে ফের জোরকদমে কারবার শুরু করেছে পিন্টু। সম্প্রতি এক বার গ্রেফতার হয়ে দিন পনেরো জেলেও ছিল। শনিবার ফের শহরের রাস্তায় দিনেদুপুরে গুলির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে সে।

এ দিন দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে পিন্টু-সহ দু’জনকে পুলিশি হেফাজত ও বাকি দু’জনকে জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার জনকেই বৃহস্পতিবার আবার আদালতে তোলা হবে।

Coal smuggler Arrested Murder Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy