বাঁ দিকে, সালানপুরে সূর্যকান্ত মিশ্র। ডান দিকে, বুদবুদে অধীর চৌধুরী।— নিজস্ব চিত্র।
এক নেতা সরব হলেন এই সরকারের আমলে রাজ্যে শিল্পের পরিস্থিতি নিয়ে। আর এক জন শাসকদলকে বিঁধলেন সারদা-কাণ্ড থেকে আলুচাষিদের অপমৃত্যুর মতো নানা প্রসঙ্গ তুলে। রবিবার সালানপুরে সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র ও বুদবুদে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, দু’জনেই আবার সরব হলেন পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে। শাসকদল সন্ত্রাস না করলে কাটোয়া পুরসভায় তাঁরা কুড়িটি আসনই পেতেন বলে দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে তো যাদুঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু পুরসভার ফল প্রমাণ করে দিয়েছে, কংগ্রেস এগোচ্ছে।’’ তবে সংগঠনের দুর্বলতা এবং ঠিক রাজনৈতিক পরিকাঠামো না থাকায় সেই অগ্রগতি ধীর গতিতে হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক ব্যর্থতা, দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে ধর্মের নামে গ্রাম দখলের অভিযোগে এ দিন কংগ্রেস ও আইএনটিইউসি প্রতিবাদসভার আয়োজন করে বুদবুদে। অধীরবাবু ছাড়াও ছিলেন দলের নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। আশপাশের এলাকা থেকে কয়েকশো মানুষ সভায় যোগ দিয়েছিলেন। ভিড় দেখে খুশি অধীরবাবু বলেন, ‘‘কোনও ঘটনা নয়, নির্বাচনও নেই। তা সত্ত্বেও এত মানুষ এসেছেন। আমরা যে এগোচ্ছি তা বোঝা যাচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আলুচাষিদের দুঃখ উনি (মুখ্যমন্ত্রী) দেখতে পান না। কেউ শখ করে আত্মহত্যা করে না।’’ সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে অধীরের মন্তব্য, ‘‘মোদী-মমতার নতুন মিতালিতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে।’’
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্তবাবু ও মোদী-মমতা আঁতাতের অভিযোগ তোলেন। সালানপুরে এ দিন ডিওয়াইএফের ২০তম বর্ধমান জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। ১০ মে বার্নপুরের ইস্কোর আধুনিকীকরণ প্রকল্পের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে মোদী ও মমতার এক মঞ্চে থাকার কথা রয়েছে। সে প্রসঙ্গে সূর্যকান্তবাবুর মন্তব্য, ‘‘আগেই বলেছি, ওদের পর্দার পিছনে দোস্তি, বাইরে কুস্তি।’’
পুরভোটে রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে প্রতিরোধের ডাক দেন তিনি। হাজার দশেক লোকের সভায় তিনি বলেন, ‘‘অনেকের হাতে ঝান্ডা দেখছি। ভুলে যাবেন না, ঝান্ডার সঙ্গে ডান্ডাও আছে। সেটা সঙ্গে রাখুন। অন্যের মাথা ভাঙার জন্য নয়, নিজের মাথা বাঁচানোর জন্য।’’ তাঁর দাবি, ‘‘হিন্দুস্তান কেব্লস তো বন্ধ হয়ে গেল। আমরা আন্দোলন করেছিলাম। তখন তবু বেতন পেয়েছিলেন কর্মীরা। এখন তো বেতনও বন্ধ।’’ আসানসোল-সহ রাজ্যের সাতটি পুরসভায় সংযুক্তিকরণের কারণ দেখিয়ে ভোট আটকে রাখার প্রসঙ্গও তোলেন সূর্যকান্তবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাতটি পুরসভায় ভোট করানোর জন্য রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। সরকার দিনক্ষণ পিছোনোর চেষ্টা করবে। তবে নির্বাচন যখনই হোক, আমরা তৈরি।’’
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্যে, ‘‘কাউকে উত্তেজিত করার জন্য কেউ এ সব বলতেই পারেন। তবে রাজ্য এগোচ্ছে না পিছোচ্ছে, মানুষ বোঝেন। এ সব বলে লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy