কালনার সরু রাস্তায় পরপর টোটো। নিজস্ব চিত্র।
বড় রাস্তা হোক বা গলি, এঁকেবেঁকে ছুটছে রঙবেরঙের টোটো।
প্রথম দিকে যাতায়াতের এমন সহজ মাধ্যম পেয়ে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন কালনার বাসিন্দারা। কিন্তু ঘিঞ্জি শহরে উত্তরোত্তর টোটো বাড়তে থাকায় হাঁটাচলা দায় হয়ে পড়েছে তাঁদের। ছোটখাট দুর্ঘটনা, অভিযোগও উঠেছে। দেরিতে হলেও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
৩ সেপ্টেম্বর কালনা পুরসভা একটি বৈঠক ডেকেছে। থাকবেন মহকুমাশাসক এবং এসডিপিও। সেখানে বৈধ টোটোগুলিকে নম্বর দেওয়া, চালকের পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে টোটো চালানো-সহ নানা বিধি চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘অনেকেই একাধিক টোটো কিনে ব্যবসা করছেন। এক জনের নামে একাধিক টোটোর নম্বর দেওয়া হবে না। কড়া ভূমিকা নেবে পুরসভা।’’
পুরসভা সূত্রেই জানা যায়, শহরে এখন প্রায় ১২০০ টোটো চলে। কোনও নির্দিষ্ট রুট না থাকায় একাধিক টোটো জমা হয়ে যানজট নিত্য ঘটনা। পুরসভার দাবি, মহকুমা প্রশাসন খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে এমনও লোক রয়েছেন যিনি ১৭টি টোটো কিনে ভাড়া খাটাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে দুটো শর্ত থাকছে। প্রথমত, প্রতি দিন ভাড়ার টাকা দিতে হবে। আর গাড়ির ব্যাটারি, টায়ার পাল্টানোর দায়িত্ব মালিকের। তবে এ বার টোটো চালানোর নির্দিষ্ট বিধি বেঁধে দেওয়া হবে বলেও মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, যাঁর নামে গাড়ি তাঁকেই বৈধ টোটো চালক বলে ধরা হবে। সেই গাড়িতে ‘টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ দেওয়া হবে। পুরসভায় এই নম্বর লাগানোর জন্য আলাদা ভাবে আবেদন করতে হবে। সোমবার মহকুমাশাসকের দফতরে মডেল নম্বর প্লেট দেখানোও হয়। পুরসভার দাবি, নম্বর প্লেটের উপর পুরসভার হলমার্ক লাগাতে হবে। মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরে প্লেটবিহীন টোটো দেখা গেলে তা সিজ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া চালককে পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে টোটো চালাতে হবে।
মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এক জন মালকের নামে একটি করে নম্বর এবং পরিচয় পত্র দেওয়া হলে শহরে টোটোর সংখ্যা শহরে দাঁড়াবে প্রায় ৬০০। তারপরে যানজট দূর করতে টোটোগুলিকে ভাগ করে দেওয়া হবে বিভিন্ন রুটে। আপাতত চারটি রুটের কথা ভাবা হয়েছে। যেমন, ষ্টেশন থেকে খেয়াঘাট, নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে আদালত। প্রতি রুটের টোটো আলাদ রং করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চালকদেরও নির্দিষ্ট পোশাক থাকবে। আপাতত খাকি, ধূসর,নীল এবং সবুজ রং ভাবা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এ দিন মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘যানজট এবং ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে শহরকে মুক্ত করতে টোটো চলাচলে নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। কোন রুটে কারা গাড়ি চালাবেন সে বিষয়টি লটারির মাধ্যমে ঠিক হবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৩ সেপ্টম্বরের বৈঠকে।’’ শহরের বেশ কিছু রাস্তা ‘ওয়ান ওয়ে’ করার ভাবনা রয়েছে বলেও তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy