Advertisement
E-Paper

পাঁচ দশক পরে ফের প্রতিমা এল বেলগ্রামে

প্রায় ৫০ বছর পরে বুধবার সন্ধ্যায় আবার মণ্ডপে প্রতিমা এসেছে।

কাজল মির্জা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৯
বেলগ্রামের প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

বেলগ্রামের প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের কথা। এক কিশোরীর অপমৃত্যুর জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গ্রামের সর্বজনীন দুর্গাপুজো। সেই থেকে এত দিন গ্রামে দুর্গা প্রতিমা আসেনি। কোনও মতে ঘট পুজো হতো।

পরিস্থিতি পাল্টাল প্রায় পাঁচ দশক পরে। করোনা-পরিস্থিতির মধ্যেই পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ ব্লকের সাটিনন্দী পঞ্চায়েতের বেলগ্রামে মণ্ডপে দুর্গা প্রতিমা এনে আবার শুরু হল দুর্গাপুজো। গ্রামের হিন্দু-মুসলমান সকলে মিলে পুজোর আয়োজনে হাত লাগিয়েছেন।

করোনা-পরিস্থিতির মধ্যে ফের পুজো শুরু করার কারণ কী? উদ্যোক্তাদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলেই নানা আশঙ্কা, ভয় নিয়ে রয়েছেন। গ্রামবাসীর মঙ্গল কামনায় এই আয়োজন। কৌশিক রায়, রিয়া কর্মকার, পূজা রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অসিত চৌধুরীদের সংযোজন: ‘‘প্রায় ৫০ বছর আগের কুসংস্কারে এখন আর গ্রামের মানুষ বিশ্বাস রাখেন না।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামে প্রায় দু’শো সংখ্যালঘু পরিবার-সহ প্রায় ছ’শো পরিবারের বাস। ছয়ের দশকের শেষ দিকে গ্রামে দুর্গাপুজো শুরু হয়। আয়োজক ছিল গ্রামবাসীর গড়ে তোলা ‘বেলগ্রাম সর্বজনীন দুর্গা উৎসব কমিটি’। কিন্তু বছর তিনেক পুজো আয়োজনের পরে, ১৯৭১ সালে পুজো চলাকালীন গ্রামের এক কিশোরীর অপমৃত্যু হয়। এমন ঘটনার জেরে বাসিন্দারা পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। তার পরে আর কখনও দুর্গা প্রতিমা আসেনি গ্রামে।

প্রায় ৫০ বছর পরে বুধবার সন্ধ্যায় আবার মণ্ডপে প্রতিমা এসেছে। তার আগে, মঙ্গলবার গ্রামে সিদ্ধেশ্বরী পুজো দিয়ে দুর্গার আগমন পর্ব শুরু করেন গ্রামবাসী। দুর্গাপুজো কমিটির সভাপতি রাজীব মল্লিক, চাঁদ শেখ, সম্পাদক মিটু যশেরা বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে গ্রামের কিশোরীর অপমৃত্যুতে তখনকার মানুষজন ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই পুজো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এখন সময় অনেক পাল্টেছে। কয়েকবছর ধরেই পুজো শুরু করার কথা গ্রামের মানুষজন বলছিলেন।’’

আয়োজনে শামিল হয়েছেন শেখ রাজেন, শেখ হিরারাও। তাঁরা বলেন, ‘‘গ্রামের হিন্দু ভাইবোনেরা অন্য গ্রামে পুজো দেখতে যেতেন। খুব খারাপ লাগত। তাই এ বার তাঁদের সঙ্গে আমরা পুজো আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছি। খুব ভাল লাগছে।’’ গ্রামের একটি জায়গায় মণ্ডপ তৈরি করে পুজোর আয়োজন হয়েছে। উদ্যোক্তারা জানান, সপ্তমী ও অষ্টমীতে গ্রামে দুঃস্থদের শাড়ি, কম্বল ও পোশাক বিতরণ করা হবে। তাঁদের দাবি, ভিড় না জমানো, দূরত্ব-বিধি মানা-সহ যাবতীয় করোনা-বিধি মেনেই পুজো করা হবে। আদালতের যাবতীয় নির্দেশও মানা হবে।

Belgram Durga Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy