Advertisement
E-Paper

নির্দেশের পরেই জোর নজরদারিতে

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশকে মমতা বলেন, ‘‘সীমানায় নাকা চেকিং করেন? সীমানা এলাকা দিয়ে বোমা ঢুকছে, অস্ত্র ঢুকছে, টাকা ঢুকছে। এগুলো যাতে না হয় ভাল করে দেখতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৪
তল্লাশি: ঝাড়খণ্ড সীমানার আসানসোলের ডুবুরডিহিতে। শনিবার।
ছবি: পাপন চৌধুরী

তল্লাশি: ঝাড়খণ্ড সীমানার আসানসোলের ডুবুরডিহিতে। শনিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে স্বর্ণঋণ সংস্থায় লুটপাট। অথবা যৌনপল্লিতে গুলি চালানোর ঘটনা। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে যে কোনও অপরাধের ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ সব ক্ষেত্রেই পাশের বিহার ও ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে অপরাধীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও বেশির ভাগেরই নাগাল পাওয়া যায় না। এই অবস্থায় সীমান্ত অঞ্চলে নজরদারি বাড়িয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশকে মমতা বলেন, ‘‘সীমানায় নাকা চেকিং করেন? সীমানা এলাকা দিয়ে বোমা ঢুকছে, অস্ত্র ঢুকছে, টাকা ঢুকছে। এগুলো যাতে না হয় ভাল করে দেখতে হবে। গোটা সীমানায় সিসিটিভি এবং ওয়াচ টাওয়ারে নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। বীরভূমের সীমানাও ধরে নিন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বরাকরের বেগুনিয়া ও ডুবুরডিহি-সহ চিত্তরঞ্জন, রূপনারায়ণপুরে পুলিশি তৎপরতা বেড়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চার নভেম্বর সন্ধ্যায় কুলটির সীতারামপুর ঢালের যৌনপল্লিতে আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে দুই দুষ্কৃতী। এই ঘটনায় কমপক্ষে চার জন আহত হন। এলাকাবাসীর তৎপরতায় ওই দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলে পুলিশ। দেখা যায়, ধৃতেরা দু’জনই বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। গত চার জুলাই আসানসোল সেনরেলে রোড লাগোয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জনা দশেক দুষ্কৃতীর একটি দল কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। পরে এক দুষ্কৃতীকে পটনা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ঘটনায় জড়িতরা সকলেই বিহারের অপরাধী। এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে আসানসোলের বার্নপুর রোডে একটি স্বর্ণঋণ সংস্থায় লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। তদন্তে নেমে এই ঘটনায় জড়িত কয়েকজন দুষ্কৃতীকে পটনা থেকে গ্রেপতার করে আনা হয়।

শুধু এই কয়েকটি ঘটনাই নয়। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, সাম্প্রতিক অতীতে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় যে ক’জন ধরা পড়েছে তারা সকলেই পাশের ঝাড়খণ্ড ও বিহারের বাসিন্দা। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, পরপর ঘটে যাওয়া ছোটবড় একাধিক ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট নবান্নে পাঠানোর সময় এদের সঙ্গে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের যোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীরও নজরে পড়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা সফরে এসে এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে দিক নির্দেশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সীমান্ত অঞ্চলে আরও বেশি সিসি ক্যামেরা বসানোর উপরে জোর দিয়েছেন। ওয়াচ টাওয়ারগুলিতে প্রহরায় থাকা পুলিশকর্মীদেরও বেশি করে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘এমনিতেই সীমান্ত এলাকায় পুলিশি কড়াকড়ি থাকে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা নাকা পরীক্ষা চলছে। আরও নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের পশ্চিম প্রান্তে বরাকরের বেগুনিয়া ও ডুবুরডিহি ছাড়া রূপনারায়ণপুর ও চিত্তরঞ্জন সীমান্ত অঞ্চলটিই ভিন্‌ রাজ্যের দুষ্কৃতীদের প্রবেশ পথ। এই এলাকায় তিনশো সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। ডুবুরডিহির ওয়াচটাওয়ারে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বসানো হবে। বেগুনিয়া ও রূপনারায়ণপুরে ওয়াচটাওয়ার বানানো হবে। পুলিশের পক্ষে এই বিষয়ে পুর-কর্তৃপক্ষেরও সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

Surveillance State Border Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy