Advertisement
E-Paper

নড়াচড়া হোক দুর্গাপুরের জেসপেও, দাবি রক্ষীদের

শিল্পপতি পবন রুইয়া গ্রেফতার হওয়ার পরে দুর্গাপুরের বন্ধ জেসপ কারখানা নিয়ে সরব হলেন কারখানার বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা। নিয়মিত বেতন না মেলা রক্ষীরা পেট চালাতে প্রায় প্রত্যেকেই অন্য কোনও ছোটখাটো পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০০
বন্ধই পড়ে রয়েছে কারখানা। নিজস্ব চিত্র।

বন্ধই পড়ে রয়েছে কারখানা। নিজস্ব চিত্র।

শিল্পপতি পবন রুইয়া গ্রেফতার হওয়ার পরে দুর্গাপুরের বন্ধ জেসপ কারখানা নিয়ে সরব হলেন কারখানার বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা। নিয়মিত বেতন না মেলা রক্ষীরা পেট চালাতে প্রায় প্রত্যেকেই অন্য কোনও ছোটখাটো পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাই কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখাবেন বলে ঠিক করেও শেষ পর্যন্ত একজোট হতে পারেননি। তবে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ, দমদমের জেসপ বা হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার মতোই দুর্গাপুরের কারখানাতেও বারবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। অথচ, কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য নজরে আসেনি।

দমদমের জেসপ কারখানায় লাগাতার চুরি ও আগুন লাগানোর ঘটনায় শিল্পপতি পবন রুইয়ার বিরুদ্ধে মামলা শুরু করে রাজ্য সরকার। পুলিশের দাবি ছিল, কারখানায় যন্ত্রাংশ চুরির সঙ্গে যুক্ত ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, চুরি ও আগুন লাগানোর পিছনে কর্তৃপক্ষের হাত আছে। তদন্তে নামে সিআইডি-ও। বছর তিনেক আগে ওয়াগন তৈরির জন্য রেল কর্তৃপক্ষ এই কারখানায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছিল। অভিযোগ, ওয়াগন বানানো হয়নি। যন্ত্রাংশও ফেরত দেননি কর্তৃপক্ষ। সেই যন্ত্রাংশের অধিকাংশই সরিয়ে ফেলেছে দুষ্কৃতীরা। শনিবার দিল্লি থেকে সিআইডি পবনবাবুকে গ্রেফতার করে রাতে কলকাতায় নিয়ে আসে।

দুর্গাপুরের জেসপ কারখানাটি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ২০০৩ সালে কিনে নেওয়ার পরে আর চালু করেননি পবন রুইয়া। উল্টে, এখানেও দফায়-দফায় দুষ্কৃতীরা হাপিস করে দিয়েছে কারখানার অধিকাংশ যন্ত্রাংশ। ১৯৫৮ সালে গড়ে ওঠা এই কারখানায় রেলের বগি, রোলার, ফাউন্ড্রি, ক্রেন ইত্যাদি তৈরি হতো। প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মী ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলার পরে ১৯৯৯ সালে বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। ২০০৩ সালে ১৮ কোটি দিয়ে ১১৭ একর জমি-সহ প্ল্যান্ট কিনে নেয় রুইয়া গোষ্ঠী। উৎপাদন আর শুরু হয়নি। মাঝে ২০০৮ সালে এডিডিএ-র কাছে জমির একাংশে আবাসন প্রকল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ার পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়। এডিডিএ সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। কারখানায় উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় যন্ত্রাংশ হাপিস করতে থাকে দুষ্কৃতীরা। তা নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ আদৌ কোনও দিন তৎপর হননি বলে অভিযোগ কারখানার বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের একাংশের। দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া না মেটানোয় কয়েক বছর আগে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেয় ডিপিএল।

এখন কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা নিয়মিত বেতন পান না বলে অভিযোগ। তাঁদের কেউ ভাড়ায় টোটো চালান, কেউ দোকানে কাজ করেন। তাঁদের কয়েকজনের কথায়, ‘‘দমদমের জেসপ বা সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার মতোই আমাদের দুর্গাপুরের এই কারখানাতেও দুষ্কৃতীরা সব যন্ত্রাংশ হাপিস করে দিয়েছে। বারবার চুরি হয়েছে। অথচ, চুরি আটকাতে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ দেখা যায়নি।’’

শহরের বিধায়ক থাকাকালীন সিপিএমের বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী কারখানা খোলার ব্যাপারে উদ্যোগের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেন পবনবাবুকে। কিন্তু কারখানা খোলার সদর্থক কোনও প্রচেষ্টা নজরে আসেনি বলে বিপ্রেন্দুবাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘এ বার দুর্গাপুরের জেসপ নিয়েও নড়াচড়া হবে বলে আশা করছি।’’

Factory Durgapur Jessop Industry Jessop Ruia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy