Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাইরের সংস্থা বরাত পাওয়ায় ক্ষোভ, বন্ধ ট্যাঙ্কার সরবরাহ

বাইরের ট্যাঙ্কার ঢোকার প্রতিবাদে সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার রাজবাঁধ ডিপোয় কর্মবিরতি পালন করল স্থানীয় ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠন। এর ফলে তেল আনা-নেওয়ার কাজ ব্যাহত হয়। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে টানা কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে স্থানীয় ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠনটি।

রাস্তার পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্যাঙ্কার। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্যাঙ্কার। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪৪
Share: Save:

বাইরের ট্যাঙ্কার ঢোকার প্রতিবাদে সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার রাজবাঁধ ডিপোয় কর্মবিরতি পালন করল স্থানীয় ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠন। এর ফলে তেল আনা-নেওয়ার কাজ ব্যাহত হয়। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে টানা কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে স্থানীয় ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠনটি। এর জেরে পাঁচ জেলার প্রায় সাড়ে তিনশো পাম্পে তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তেল সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ ডিসেম্বর ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ট্যাঙ্কার সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়। স্থানীয় ‘রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ টেন্ডারের মাধ্যমে ২৪২টি ট্যাঙ্কার সরবরাহের বরাত পায়। এ ছাড়া অন্য কিছু সংস্থাও টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত পেয়েছে। অভিযোগ, রাজবাঁধের ওই সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে একচেটিয়া ভাবে ডিপোয় ট্যাঙ্কার সরবরাহ করে এসেছে। ই-টেন্ডারের মাধ্যমে বাইরের ট্যাঙ্কার মালিকরা ট্যাঙ্কার সরবরাহের বরাত পাওয়ার বিরোধিতায় নামে তারা। বাইরের ট্যাঙ্কার ঢুকতে চাইলেই বারবার বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ-প্রশাসন মধ্যস্থতা করে সমস্যা মিটিয়েছে।

ই-টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত পাওয়া ঝাড়খণ্ডের এক সংস্থার ১৪টি ট্যাঙ্কার ডিপোয় ঢুকতে গেলে শনিবার ফের নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়। রাজবাঁধের মালিকদের সংগঠন তাদের বাধা দেয়। পুলিশ শেষ পর্যন্ত জোর করে ট্যাঙ্কারগুলি ডিপোর ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়। বাধা দেওয়ায় আটক করা হয় চার জনকে। রাজবাঁধের ট্যাঙ্কার মালিক সংগঠনের সম্পাদক সুনীল শ্যাম অভিযোগ করেন, তাঁদের ট্যাঙ্কারগুলি পর্যাপ্ত কাজ পায় না। তার উপরে মাঝে-মধ্যেই নতুন-নতুন সংস্থার ট্যাঙ্কার চলে আসছে। এর ফলে স্থানীয় ট্যাঙ্কার মালিক ও চালক-কর্মীদের অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। তাঁর দাবি, ‘‘শনিবার ঝাড়খণ্ডের ট্যাঙ্কারগুলি জোর করে ভিতরে ঢোকানো হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদে সোমবার কর্মবিরতি পালন করেছি।’’ তাঁর আরও দাবি, তেল সংস্থা ঠিক করুক, মালিক সংগঠনের ২৪২টি ট্যাঙ্কার নেবে, না কি ঝাড়খণ্ডের ওই ১৪টি ট্যাঙ্কার দিয়ে কাজ চালাবে। তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁদের সংগঠনের গাড়ি ঢোকার সময় নানা নিয়মকানুন মানতে হয়। অথচ, ঝাড়খণ্ডের ট্যাঙ্কারগুলি ঢোকার সময়ে পর্যাপ্ত পরীক্ষা না করেই ডিপোয় ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। এ দিন মালিক সংগঠনের ট্যাঙ্কারগুলি ডিপোর সামনে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড় করিয়ে রেখে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ডিপো ছিল সুনসান। বেশ কিছু পোস্টারও সাঁটানো হয় মালিক সংগঠনের তরফে।

তেল সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ডিপো থেকে পেট্রোল, ডিজেল পাঠানো হয় বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও মুর্শিদাবাদের প্রায় সাড়ে তিনশো পাম্পে। দৈনিক প্রায় ২০ লক্ষ লিটার তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে এই ডিপো থেকে। এক দিন সরবরাহ বন্ধ থাকলে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, পাম্পে দৈনন্দিন প্রয়োজন ছাড়াও কিছু তেল সঞ্চয় করে রাখা হয়। তবে টানা কর্মবিরতি চললে সমস্যা হবে বলে জানান সংস্থার এক আধিকারিক। তিনি আরও জানান, আগে সাধারণ টেন্ডারের মাধ্যমে ট্যাঙ্কার নেওয়া হত। এর ফলে স্থানীয় ট্যাঙ্কার অ্যাসোসিয়েশন বেশি সুযোগ পেত। এখন জাতীয় স্তরে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ডিপোর জন্য ট্যাঙ্কার চাওয়া হয়। ফলে, এই রাজ্য তো বটেই, ভিন্‌ রাজ্য থেকেও বিভিন্ন সংস্থা টেন্ডারে যোগ দেয়। বরাতও পায়। তেল সংস্থা প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের কাজে লাগায়। ডিপোর বাইরে কী ঘটছে তা দেখার দায়িত্ব সংস্থার নয়। তা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন দেখে জানিয়ে সংস্থার ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Agitation tanker rajbandh jharkhand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE