পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসেবে তাঁকে মনোনয়ন করে সরকারের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে স্কুলে। কিন্তু শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত, সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা গোলাম সরওয়ারকে সেই পদে মানতে নারাজ অভিভাবক ও এলাকাবাসীর একাংশ। এই মনোনয়নের বিরোধিতা করে তাতে স্থিতাবস্থার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কিছু অভিভাবক। আসানসোলের রহমানিয়া উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনায় আবার সোমবারই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেন গোলাম-সহ চার অভিযুক্ত। জামিন পান ঘটনায় ধৃত আরও দু’জন।
আসানসোলের রেলপাড় এলাকায় হাজি কদম রসুল স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে সরকারি তরফে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর গোলাম সরওয়ার। ঠিক ছিল, আজ, সোমবার তাঁর হাতে মনোনয়ন পত্রটি তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু গত বুধবার রেলপাড়ের রহমানিয়া উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে অঙ্কের শিক্ষক ওয়াজউদ্দিন জামালকে মারধরে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। শনিবার তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানায় তৃণমূল।
এর মধ্যেই হাজি কদম রসুল স্কুলের অনেক অভিভাবক, এমনকী শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশও সভাপতি পদে তাঁর মনোনয়নের বিরোধিতা শুরু করেন বলে জানা গিয়েছে। আদালতেরও দ্বারস্থ হন কয়েক জন। বিষয়টি জানার পরে প্রশাসনের তরফে শান্তি বজায় রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওই এলাকার তৃণমূল নেতা মহম্মদ কুরবান আলি বলেন, ‘‘আমরা গোলাম সরওয়ারকে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে চাইছি না। কারণ, তিনি শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত।’’ গোলাম সরওয়ার মনোনয়ন পত্র আনতে গেলে বিক্ষোভ হতে পারে আঁচ করে সকাল থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের তরফে তাঁকে স্কুলে না যাওয়ার আর্জি জানানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন শিক্ষকের দাবি, রহমানিয়া স্কুলের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত। তাই সেই ঘটনায় অভিযুক্ত পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে বসুন, তা চাইছেন না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সামসের আলম এ দিন বলেন, হাইকোর্ট থেকে এক জন আইনজীবীর নোটিস আমি পেয়েছি। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে স্থিতাবস্থা বজায় রেখেছে আদালত। তাই মনোনয়ন পত্র যেন তুলে দেওয়া না হয়। জটিলতা এড়াতে আমি আপাতত মনোনয়ন পত্রটি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ গোলাম সরওয়ার অবশ্য বলেন, ‘‘আমাকে সরকার মনোনীত করেছে। আমি নিজে চিঠি আনতে যাব না। আমার কাছে পৌঁছে দিলে নেব।’’
শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় সোমবারই আসানসোল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন গোলাম ও দীপক গুপ্ত-সহ চার অভিযুক্ত। দু’জনকে রবিবার রাতেই পুলিশ ধরেছিল। সোমবার তাদেরও আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক প্রত্যেককে পাঁচশো টাকার বিনিময়ে জামিন দেন। এ নিয়ে অবশ্য গোলাম কোনও মন্তব্য করতে চাননি।