বিক্ষোভে আইনজীবীরা। নিজস্ব চিত্র
অন্য সব দিনের মতো পুলিশকর্মীরা আসেননি। অভিযুক্তদের আনা হয়নি আদালতে। পৌঁছয়নি সেই সংক্রান্ত নথিপত্রও। কালনায় সোমবার আদালতের কাজে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। তার জেরে এ দিন আদালতে কোনও কাজ হয়নি দাবি করে বিক্ষোভ দেখালেন আইনজীবীরা।
আইনজীবীরা জানান, এ দিন আদালতে এসে তাঁরা জানতে পারেন, জিআরও কার্যালয় থেকে কোনও নথি আসবে না। এমনকী, এই কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না। ফলে, যে অভিযুক্তদের কোর্টে তোলার তারিখ ছিল, তাদের হাজির করানো হবে না। আইনজীবীদের দাবি, আদালতে কাজের জন্য যে সব পুলিশকর্মীরা আসেন, এ দিন সকাল থেকে তাঁদের দেখা যায়নি। দুপুর ১২টা থেকে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় শোরগোল।
কালনা বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের দাবি, আদালত বিষয়টি জানতে জিআরও-কে ডেকে পাঠায়। তিনি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারককে জানান, এসডিপিও-র (কালনা) নির্দেশে নথিপত্র পাঠানো হয়নি। এর পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে আদালত চত্বর। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইনজীবীরা একটি বৈঠক করেন। সেখানে অভিযোগ ওঠে, পুলিশ বিচার ব্যবস্থাকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। এর পরেই আইনজীবীরা উচ্চ আদালত, জেলা আদালত, রাজ্য বার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান, জেলা পুলিশ সুপার, জেলাশাসক-সহ নানা স্তরে চিঠি পাঠান।
দুপুর ২টো নাগাদ আদালতের সামনে আইনজীবীরা এসডিপিও-র অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ দেখান। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রভাত সাহার অভিযোগ, ‘‘আমাদের এক আইনজীবী ফিরদৌস মণ্ডল রাজস্থানে মামলার কাজে গিয়ে অপহৃত হন। কোনও রকমে তিনি পালিয়ে আসেন। এই ঘটনায় পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ জানতে গেলে আইসি তা নিতে চাননি। সে জন্য আইসি-র বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর পরেই পুলিশ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি।’’ বিক্ষোভের পরে প্রায় কুড়ি জন আইনজীবীর একটি দল এসিজেএম কুসুমিকা দে মিত্রকে লিখিত ভাবে জানান, পুলিশ যেহেতু আদালতে কোনও অভিযুক্তকে হাজির করেনি এবং নথিও পাঠায়নি, তাই তাঁরা আদালতে পুলিশ ফাইলের কাজে যোগ দিচ্ছেন না।
আদালতে কাজ না হওয়ায় হয়রানির শিকার হতে হয় বিচারপ্রার্থীদের। বৈদ্যপুরের রথতলায় শিশুবলি গুজবের জেরে পুলিশের উপরে হামলায় অভিযুক্ত ৪৫ জনের জামিনের আর্জি জানানোর কথা ছিল এ দিন। তা হয়নি। পূর্বস্থলীর বিকাশ বাগ বলেন, ‘‘একটি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় আমার শ্যালকের আদালতে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল। কাজ না হওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে।’’
আদালতের এক কর্মী দাবি করেন, ‘‘বিচারকেরা এই ঘটনা ইতিমধ্যে উচ্চ আদলতের নজরে এনেছেন।’’ এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় অবশ্য বলেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থার কাজ ব্যাহত হবে, এমন কোনও কাজের নির্দেশ জিআরও-কে দেওয়া হয়নি। তিনি আদালতে কী বলেছেন, আমার জানা নেই।’’ জিআরও জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দুপুরে অসুস্থ পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy