দলের কর্মসূচির পরেই বিজেপির এক বুথ সভাপতির বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের উক্তা গ্রামে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তা অস্বীকার করে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছে তৃণমূল। দু’তরফই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে।
বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, কয়েকদিন ধরেই দলের ‘বুথ চলো অভিযান’ কর্মসূচি চলছে আউশগ্রামে। মঙ্গলবার উক্তা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় বুথ সভাপতিদের সংবর্ধনা জানানো ও তাঁদের বাড়ির বাইরে পোস্টার-পতাকা টাঙানো হয়।
স্থানীয় বিজেপি নেতা মোসলেম শেখের অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ উক্তা গ্রামের ৬৪ নম্বর বুথের সভাপতি অধীর কর্মকারকে সংবর্ধনা দিয়ে তাঁর বাড়ির বাইরের দেওয়ালে বুথ সভাপতি লেখা বোর্ড সাঁটিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে দলের নেতা-কর্মীরা ফিরে আসার পরেই, সন্ধ্যায় উক্তা-পিচকুড়ির শ’খানেক তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতী অধীরবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে হামলা চালায়। বাড়িতে ইট, পাথর ছুড়তে থাকে।’’ অভিযোগ, দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে লুটপাট, ভাঙচুর চালানো হয়। বিজেপির পতাকা, ফেস্টুন, বুথ সভাপতির বোর্ড খুলে ফেলে দেওয়া হয়। ইটের আঘাতে পরিবারের সদস্য এক যুবক জখম হন। ঘটনার পর থেকে পরিবারটি বাড়িছাড়া বলেও অভিযোগ বিজেপি নেতাদের।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার সকালে অধীরবাবু পুলিশের কাছে ১৭ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। বিজেপির আউশগ্রাম বিধানসভার আহ্বায়ক দেবব্রত মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাস এবং হামলার আশঙ্কায় বিধানসভা এলাকার ২৭৯টি বুথের মধ্যে ২৪টির সভাপতিদের সংবর্ধনা দেওয়া যায়নি। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের মাধ্যমে, নির্বাচন কমিশনের কাছে ওই বুথগুলি চিহ্নিত করার দাবি জানানো হবে।’’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের উক্তা অঞ্চল সভাপতি শেখ সফিউল আলমের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ওই পরিবারের লোকজন কিছু দিন আগে পর্যন্ত তৃণমূল করত। তখন দল থেকে একটি ক্যারম বোর্ড দেওয়া হয়, যেটি অধীরবাবুর বাড়িতে রাখা ছিল। মঙ্গলবার এলাকায় বিজেপির মিছিলে ঘোরেন ওঁরা। তার পরেই আমাদের দলের ছেলেরা তাঁদের বাড়ি থেকে ক্যারম বোর্ডটি আনতে গেলে ছাদ থেকে ইট, পাথর ছোড়া হয়। চার জন জখম হয়েছেন।’’ তৃণমূলের তরফে গুসকরা ফাঁড়িতে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে, জানান তিনি। তৃণমূলের আউশগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি শেখ সালেক রহমানের দাবি, ‘‘ওই সমস্ত এলাকায় বিজেপির কোনও কর্মী নেই। তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। কোথাও বিজেপির কর্মসূচিতে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি।’’