Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
panagarh

Panagarh: সামগ্রিক ক্ষতিপূরণ মেলেনি, অভিযোগ পানাগড় শিল্পতালুকে

দশ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে কাটলেও সামগ্রিক ভাবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মেটাতে পারেনি রাজ্য সরকার—এমনই অভিযোগ শিল্পতালুকের।

ছবি : সংগৃহীত।

ছবি : সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৫৫
Share: Save:

পানাগড় শিল্পতালুকে শিল্প গড়ার জন্য ‘স্বেচ্ছায়’ জমি দিতে এগিয়ে এসেছিলেন চাষিরা। সে জমিতে শিল্পতালুক গড়ে উঠেছে। কয়েকটি কারখানায় উৎপাদনও শুরু হয়েছে। কয়েকটির নির্মাণ চলছে। কিন্তু জমি দেওয়ার পরে, দশ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে কাটলেও সামগ্রিক ভাবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মেটাতে পারেনি রাজ্য সরকার—এমনই অভিযোগ শিল্পতালুকের জমিদাতা, বর্গাদার ও খেতমজুরদের একাংশের।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছিল। সেই সময় কাঁকসা, গলসি ও আউশগ্রাম ২ ব্লকের চাষিরা ট্রাক ভাড়া করে শিল্পের দাবিতে গিয়েছিলেন অবিভক্ত বর্ধমান জেলাশাসকের কার্যালয়ে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, শিল্প-শহর দুর্গাপুর রাতের আলোয় ঝকঝক করে। অথচ, অদূরে তাঁদের গ্রামগুলিতে সন্ধ্যা নামলেই আঁধার নামে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে তাঁরা শিল্পের জন্য জমি দিতে রাজি। জেলাশাসকের দফতর থেকে সেই প্রস্তাব পাঠানো হয় রাজ্য সরকারের কাছে। দুর্গাপুরে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) ভবনে ছ’-সাত বার জমিদাতাদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠকের পরে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। শেষে ২০০৮-এর শেষের দিকে চুক্তি হয়।

কাঁকসা, গলসি ১ ও আউশগ্রাম ২ ব্লকের কোটা, পোন্ডালি, সোঁয়াই, কাঁকসা, পানাগড় প্রভৃতি এলাকার আটশোর বেশি চাষির ১,৪৬৫ একর জমি নিয়ে ২০০৯-১০ সালে রাজ্যের তৎকালীন বাম সরকার পানাগড়ে শিল্পতালুক গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। সে কাজ এগিয়ে নিয়ে যায় তৃণমূল সরকার। ১,৪৬৫ একরের মধ্যে ১,১৪৭ একর জমি রাখা হয়েছে শিল্প-কারখানা গড়ার জন্য। এর মধ্যে কারখানা নির্মাণ কাজ চলছে অথবা কারখানা গড়ার জন্য আবেদন জমা পড়েছে সেই জমির পরিমাণ প্রায় ১,১০০ একর।

শিল্পতালুক সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচটি কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে। দু’টি কারখানা নির্মাণ শেষ হয়ে উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায়। সাতটি কারখানার নির্মাণ কাজ চলছে। ছ’টি কারখানার নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু হবে। আরও সাতটি নির্মাণ শুরু করতে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আরও দু’টি কারখানা কর্তৃপক্ষ জায়গার জন্য সম্প্রতি আবেদন জানিয়েছে।

কিন্তু ক্ষতিপূরণের বিষয়টির এখনও নিষ্পত্তি না হওয়ার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জমিদাতা, খেতমজুর ও বর্গাদারেরা। জমিদাতারা জানিয়েছেন, জমির দাম পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ‘অ্যানুয়িটি’ মেলেনি। জমিদাতাদের তরফে শেখ আবদুল রহিমের অভিযোগ, ‘‘বিঘা পিছু এক কাঠা করে (সর্বোচ্চ পাঁচ কাঠা) ‘ডেভেলপড ল্যান্ড’ দেওয়ার কথা ছিল। জমিদাতা পরিবারের ছেলেমেয়েদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে শিল্পতালুকে যে কারখানা গড়া হবে সেখানে কাজের অগ্রাধিকার দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল। তা মানা হয়নি।’’ খেতমজুর ইউনিয়ন-এর তরফে সুভাষ সাহা জানান, বর্গাদারদের ক্ষেত্রে জমির দামের এক চতুর্থাংশ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার কথা হয়েছিল। তা তাঁরা পাননি। ক্ষতিপূরণ পাননি খেতমজুররাও।

জমিদাতাদের একাংশ দাবি করেছেন, বহুবার তাঁরা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে দরবার করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁরা ফের কাঁকসা ব্লক অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে একটি বেসরকারি কারখানার শিলান্যাস করতে যাওয়ার আগে, তাঁরা শিল্পতালুকের সামনে জড়ো হয়েছিলেন বিক্ষোভ দেখানোর জন্য। তবে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তাঁদের দাবিপত্র পেয়েছি। জেলাশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুত এর সুরাহা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panagarh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE