তদন্তকারীরা চলে যেতেই ফের খাসজমি ঘিরে নেওয়ার অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের বিক্ষোভ শুরু করেছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা অবিলম্বে এই জমি পুনরুদ্ধার করে সরকারি কাজে ব্যবহারের দাবি তুলেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তারা।
সালানপুরের দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের হদলা মৌজা অঞ্চলের খাসজমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনার প্রতিবাদও করেন। বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে তদন্তে নামে সালানপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। দফতরের আধিকারিক শুভদীপ টিকাদার তদন্ত কমিটি গঠন করে এলাকায় পাঠান। গত মঙ্গলবার কমিটির সদস্যেরা এলাকায় গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁরা ফিরে যেতেই ফের কাঁটাতার ও বাঁশের বেড়া দিয়ে জমি দখল করতে শুরু করেছে একদল বহিরাগত। বাসিন্দাদের অনেকে এর প্রতিবাদ করায় তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এলাকায় সোমবার গিয়ে দেখা গেল, মাইথন লেফ্ট ব্যাঙ্ক লাগোয়া কল্যাণেশ্বরী ফাঁড়ির ঠিক পিছনের দিকে দু’টি জমি ঘেরা শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় কয়েকজন জমি-মাফিয়া এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। তারা প্রথমে কাঁটাতার ও বাঁশের বেড়া দিয়ে জমির বেশ কিছুটা অংশ ঘিরেছে। পরে ছোট ছোট প্লট করে বহিরাগতদের কাছে বিক্রি করছে।
খাসজমি দখলের এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানান সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা সিপিএম নেত্রী শিপ্রা মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিঘার পরে বিঘা খাসজমি দখল হচ্ছে। উপযুক্ত প্রমাণ-সহ নথি ভূমি সংস্কার দফতরে জমা করেছি। কিন্তু দফতরের কোনও হেলদোল নেই।’’ তাঁর দাবি, এই জমি পুনরুদ্ধার করে এলাকার বাসিন্দাদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার করে দেওয়া হোক। মাইথন যেহেতু ভ্রমণকেন্দ্র তাই এই জমিতে ভ্রমণার্থীদের জন্য ‘লজ’ তৈরি করা হোক। এতে সরকারের আয় হবে। জমিও রক্ষা হবে। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘পুনরুদ্ধার করে এই জমিতে এলাকার বেকার যুবকদের জন্য চাকরির প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়া হোক।’’
ভূমি আধিকারিক শুভদীপ টিকাদারের অবশ্য দাবি, এলাকায় ৫২ শতকের একটি খাসজমি দখল করা হয়নি। সেটি দখলমুক্ত আছে। তবে প্রায় দু’শতকের একটি জমিতে কিছু রায়তি বসবাসকারীর হদিস মিলেছে। তাঁরা বৈধ কি না রেকর্ড দেখতে হবে। ফের জমি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নেওয়া হবে। তবে সরকারি জমি কিছুতেই দখল করতে দেওয়া হবে না।’’
জমি-মাফিয়ারা কারা? তারা কারও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় রয়েছে? এ বিষয়ে এলাকার লোকজন কারও নাম বলতে চাননি। শিপ্রা মুখোপাধ্যায়ও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।