Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আসানসোল জেলা হাসপাতাল

যত্রতত্র রাখা গাড়ি, পথ পায় না অ্যাম্বুল্যান্সও

সম্প্রতি এমন ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের কাছে। রোগীর পরিজনেরা সুপারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

হাসপাতালে ঢোকার পথে দাঁড়িয়ে অটো, গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে ঢোকার পথে দাঁড়িয়ে অটো, গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৪২
Share: Save:

হাসপাতালে ঢোকার মুখে অটোর ভিড়ে আটকে গেল রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুল্যান্স। হুটারের আওয়াজ শুনেও হেলদোল নেই রাস্তা জুড়ে থাকা অটোর চালকদের। উল্টে, রোগীর পরিজনেরা রাস্তা ছাড়তে বলায় রীতিমতো বচসা জুড়ে দিলেন তাঁরা। শেষে স্থানীয় কয়েকজনের মধ্যস্থতায় মিটল সমস্যা।

সম্প্রতি এমন ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের কাছে। রোগীর পরিজনেরা সুপারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এর পরেই হাসপাতাল চত্বরে বেআইনি ভাবে রাখা অটো, টোটো, মোটরবাইক ও গাড়ি সরাতে উদ্যোগী হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তারা মাঠে নামায় হাসপাতাল চত্বর তখনকার মতো ফাঁকা হলেও পরে আবার একই অবস্থা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

নিখিলবাবু বলেন, ‘‘একটি ঘটনা নয়। প্রায় প্রতিদিনই রোগীর পরিজনেরা এই রকম গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ করছেন। হামেশাই অটো চালকদের সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বিবাদ বেধে যাচ্ছে।’’ তিনি জানান, অতিষ্ঠ হয়ে মাঝে-মাঝে তাঁরা পুলিশ ডেকেও অভিযান চালাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও দু’এক দিন পরে আবার যত্রতত্র যানবাহন রাখা চালু হয়ে যায়।

এসবি গড়াই রোড থেকে ডান দিকে ঘুরে হাসপাতালের প্রথম গেট দিয়ে ঢুকলেই দেখা যায়, সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অটো ও টোটো। সামনে আর একটু এগোলে চোখে পড়ে, শতাধিক মোটরবাইক কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই রাখা আছে। সেখান থেকে ডান দিকে ঘুরলেই দেখা যায়, পরপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু গাড়ি। নিখিলবাবু জানান, এই পুরোটাই বেআইনি পার্কিং। সব জায়গায় ‘নো-পার্কিং’ বোর্ডও দেওয়া রয়েছে।

বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতাল চত্বরে অপেক্ষা করে বোঝা যায়, এর জেরে কত রকম সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পাশের রাস্তায় বেআইনি ভাবে গাড়ি রাখায় যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। ময়না-তদন্তের জন্য এই রাস্তা ধরেই দেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। অবৈধ পার্কিংয়ের জটে দেহ নিয়ে আসা গাড়ি দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘অনেক সময় এমনও হয়েছে, মুমূর্ষ রোগীকে দেখতে যাওয়ার পথে আটকে গিয়েছে চিকিৎসকের গাড়ি।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এই বেনিয়ম বন্ধ করতে তাঁরা বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। পুলিশের অভিযানের পরে ফের আগের অবস্থায় ফিরে গিয়েছে সব কিছু। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘সম্প্রতি রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে আমরা হাসপাতাল চত্বরে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তিনি জানান, এই ক্যাম্প বসানো হলে বেআইনি পার্কিং বন্ধের পাশাপাশি চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগীর পরিজনেরা বারবার যেমন তাণ্ডব চালাচ্ছেন, তা-ও সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। রোগীকল্যাণ সমিতির এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরগুলির সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলে হাসাপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ambulance Hospital Illegal Parking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE