Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আমনে ধসা রোগ, আশঙ্কায় চাষি

আমনের মরসুম সবে শুরু। কোথাও ধান গাছের বয়স ২৫ দিন, কোথাও ৩০। তারই মধ্যে ধসা রোগের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। কালনা মহকুমার একাধিক এলাকার চাষিদের দাবি, বেশ কিছু জমিতে ওই রোগ দেখা যাচ্ছে। কৃষি দফতরেরও দাবি, হাওয়ার সঙ্গে এই রোগ দ্রুত এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পরে।

হলুদ হয়ে গিয়েছে ধান গাছ। নিজস্ব চিত্র।

হলুদ হয়ে গিয়েছে ধান গাছ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৩৮
Share: Save:

আমনের মরসুম সবে শুরু। কোথাও ধান গাছের বয়স ২৫ দিন, কোথাও ৩০। তারই মধ্যে ধসা রোগের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। কালনা মহকুমার একাধিক এলাকার চাষিদের দাবি, বেশ কিছু জমিতে ওই রোগ দেখা যাচ্ছে। কৃষি দফতরেরও দাবি, হাওয়ার সঙ্গে এই রোগ দ্রুত এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পরে। ফলে শুরুতেই ব্যবস্থা না নিলে ফলন মার খেতে পারে।

মহকুমার পাঁচ ব্লকেই বিপুল পরিমাণে আমন ধানের চাষ হয়। সব থেকে বেশি হয় মন্তেশ্বরে। চাষিদের দাবি, সপ্তাহ খানেক ধরে জমিতে অনেক গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। পাতার উপরের অংশ হলুদ হয়ে যাচ্ছে। পরে তা ছড়িয়ে প়ড়ছে গাছের অন্য অংশেও। আতঙ্কিত চাষিরা আক্রান্ত গাছের নমুনা নিয়েও কৃষি দফতরে এসে জানতে চাইছেন প্রতিকারের উপায়। মহকুমা কৃষি দফতর জানিয়েছে, রোগটি হল ব্যাকটেরিয়াজনিত ধসা রোগ। গরম আবহাওয়াতে এই রোগ বেশি ছড়ায়। কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর, সিমলন, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট, নসরতপুর-সহ মহকুমার বহু পঞ্চায়েত এলাকাতেই এই ধসা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলেও কৃষি কর্তাদের দাবি।

চাষিদের দাবি, ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে গোবর গোলা জল এবং বেশ কিছু কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন তাঁরা। তবে তেমন ফল মিলছে না। সিমলন পঞ্চায়েত এলাকার এক চাষি বিশু ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকার বেশি র ভাগ চাষি লাল স্বর্ণ প্রজাতির ধান চাষ করেন। এই প্রজাতির ধান গাছে রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি ঘটেছে।’’ মন্তেশ্বরের চাষি আকবর শেখেরও দাবি, এলাকার অর্থনীতি ধানের উপর নির্ভরশীল। মাস খানেক হয়েছে জমিতে ধান গাছ লাগানো হয়েছে। এর মধ্যেই বহু গাছ জমিতে শুকিয়ে খড় হয়ে গিয়েছে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এখনই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা জানান, এই সময়ে সুষম মাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। নাইট্রোজেন জাতীয় সার বারবার দিতে হবে। পাশাপাশি জমির জল শুকিয়ে সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে জল দিতে হবে। মহকুমা কৃষি দফতরের এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ জানান, রোগের প্রতিকারের জন্য স্প্রে হিসাবে ১০ লিটার জলে এক গ্রাম কপার অক্সিক্লোরাইড দেওয়া যেতে পারে। একই মাত্রায় স্ট্রেপ্টোসাইক্লিন জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করলেও ভাল ফল মিলবে। আর এক সহ কৃষি অধিকর্তা সুকান্ত মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ব্যাকটেরিয়া জনিত ধসা রোগ কিনা প্রথমে তা নিশ্চিত হতে হবে চাষিদের। এক্ষেত্রে আক্রান্ত কোনও গাছের অংশ ছোট ছোট করে জল ভর্তি কাঁচের গ্লাসে রাখতে হবে। মিনিট পনেরো পর ওই জল ঘোলা হয়ে গেলে জানা যাবে গাছ ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত। এর পরে ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Amon paddy Farmer Cultivation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE