রাতেও চলছে কাজ। — নিজস্ব চিত্র
১৪ মার্চ যেন পেরিয়ে না যায়!
ওই দিন ‘মিষ্টি বাংলা হাব’-প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেই রাতের ঘুম উড়েছে বর্ধমান জেলা প্রশাসনের।
প্রকল্পকে পূর্ণাঙ্গ চেহারা দেওয়ার তাগিদ নিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বামচাঁদাইপুরে দিন-রাত কাজ চলছে। কাজের গতি দেখতে কখনও ছুটছেন জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, কখনও প্রশাসনের অন্য আধিকারিকেরা। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে সেখানে রীতিমতো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চলছে। কাজ নিয়মিত পরিদর্শন করা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে ১৪ মার্চ মিষ্টি বাংলা হাবের উদ্বোধন করতে চাইছি। সেই মতো কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রকল্প এলাকার দেড় বিঘা জমির প্রায় পুরোটা টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। ভিতরে চলছে নির্মাণ। দোতলা পর্যন্ত দেওয়াল গাঁথা শেষ করে ছাদ ঢালাই, মেঝের কাজ চলছে এখন। প্রশাসন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী গত জানুয়ারিতে মাটি-উৎসবে এসে উদ্বোধনের দিন ঘোষণা করার আগে পর্যন্ত ঢিমেতালেই কাজ চলছিল। কিন্তু এখন কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজে গতি আনতে জেলা পরিষদের ‘ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার’কে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন ও নির্মাণকারী সংস্থার দাবি, প্রকল্পের কাজ শুরুর দু’মাসের মধ্যেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। তারপর থেকে বেশ কিছু দিন নগদের অভাবে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। তাতেই কাজ আটকে ছিল কয়েক সপ্তাহ। জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ২ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দোতলা ভবন তৈরি হবে। সেখানে ৩২টি ঘর ও একটি বড় ‘হল’ থাকবে।
‘মিষ্টি বাংলা হাব’ নিয়ে শুরু থেকেই সমস্যা চলছে। কখনও নাম নিয়ে গোলমাল, কখনও বা জায়গা নিয়ে। ২০১৫ সালে মাটি উৎসবে ‘ল্যাংচা তীর্থ’ নামে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু উপযুক্ত জায়গা না পাওয়ায় প্রকল্প আটকে যায়। পরে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রকল্পের নাম বদলে ‘মিষ্টি বাংলা হাব’ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সেখানে বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা, শক্তিগড়ের ল্যাংচার পাশাপাশি অন্য জেলার মিষ্টিও রাখা হবে। সেই মতো উল্লাস মোড়ে অনাময় হাসপাতালের পাশে একটি জায়গা নির্দিষ্ট হয়। কিন্তু কাজ শুরু করতে গেলে বিক্ষোভ দেখান জমিদাতারা। বিক্ষোভ সামলাতে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী অন্য জায়গা খুঁজতে নির্দেশ দেন। তার পরেই বামচাঁদাইপুরে জমি চিহ্নিত করে গত সেপ্টেম্বর থেকে ‘মিষ্টি বাংলা হাব’ তৈরির কাজ শুরু হয়। কিছুটা দূরে আমড়া এলাকাতেও ওই ‘হাব’-এর একটা অংশ তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমানের ‘সীতাভোগ-মিহিদানা ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সহ-সম্পাদক প্রমোদ সিংহ বলেন, “যত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হয়ে মিষ্টি বাংলা হাব শুরু হয়, ততই ভাল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy