বহুতলে পানীয় জলের সংযোগ নিতে হলে আবাসিকদের সমাপ্তকরণ শংসাপত্র (কমপ্লিশন সার্টিফিকেট বা সিসি) জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। অন্যথায় জরিমানা দিয়ে জলের সংযোগ নিতে হবে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। বহুতল নির্মাতাদের কাছে ওই শংসাপত্র নিতে আবাসিকদের পরামর্শ দিয়েছে পুরসভা।
আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের সর্বত্র পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্ব পুরসভার। সে জন্য একাধিক জলপ্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। তবে সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী, কুলটি, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া বরো এলাকার প্রায় ২০টি ওয়ার্ডের কিছু অঞ্চলে এখনও জল সরবরাহ শুরু করতে পারেনি পুরসভা। সেখানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল সরবরাহ করছে। সরকারি নিয়মে, পুরসভার কাছে জলের সংযোগ নিতে হলে বহুতলের আবাসিকদের পরিবার পিছু ৬ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, আবেদনপত্রের সঙ্গে বহুতল নির্মাণের সমাপ্তকরণ শংসাপত্রও জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘বহুতল নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে নির্মাতাদের কিছু নিয়ম মানতে হয়। সমাপ্তকরণ শংসাপত্র জমা হলে সেই নিয়মগুলির আইনি পর্যবেক্ষণ সহজ হয়। জলের সংযোগ দিতে কোনও সমস্যা থাকে না।’’ তিনি জানান, ‘আমরুত’ প্রকল্পে পানীয় জলের প্রকল্পগুলি তৈরি করা হয়েছে। জলের সংযোগ দিতে হলে কী কী নিয়ম মানতে হবে, তা ওই প্রকল্পেই উল্লেখ করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে আধিকারিকেরা দেখেছেন, পুর এলাকায় কয়েক হাজার বহুতল তৈরি করা হলেও হাতেগোনা কয়েকটির সিসি নির্মাতারা আবাসিকদের দিয়েছেন। এই শংসাপত্র পুরসভা থেকে নিতে হলে নির্মাতাদের নির্দিষ্ট টাকা ফি বাবদ জমা দিতে হয়। তা ব্যয় করতে চান না বলেই অনেক নির্মাতা সেটি নেন না। সেক্ষেত্রে আবাসিকেরা কী ভাবে পানীয় জলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন? আধিকারিকেরা জানান, সে জন্য আবাসিকদেরই পকেট থেকে জরিমানা বাবদ খরচ করতে হবে। যে সংযোগ নিতে ছ’হাজার টাকা জমা দিতে হয়, এক লাফে তা ১২ হাজার টাকা দিতে হবে। ১২ তলা বা তার কম উঁচু আবাসনের ক্ষেত্রে টাকার এই অঙ্ক। ১২ তলার বেশি উঁচু আবাসন হলে টাকার পরিমাণ আরও বেশি বলে আধিকারিকেরা জানান।
বহুতল নির্মাতাদের সংগঠন ‘কনফেডারেশন অব রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর আসানসোল শাখার সম্পাদক শচীন রায়ের দাবি, তাঁদের সংগঠনের সদস্যেরা প্রত্যেকেই আবাসন বণ্টনের সময়ে আবাসিকদের ওই শংসাপত্র তুলে দেন। সংগঠনের সদস্য নন, এমন নির্মাতাদেরও তাঁরা এই শংসাপত্র দেওয়ার পরামর্শ দেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)