Advertisement
E-Paper

নির্দেশই সার, শহর জুড়ে ব্যানার-হোর্ডিং

নির্বাচন কমিশনের ধমক খেয়ে মঙ্গলবার রাতেই তড়িঘড়ি কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনায় সরকারি হোর্ডিং, পোস্টার, ব্যানার খোলার কাজে নেমে পড়েছে প্রশাসন। কিন্তু আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে সরকারি জায়গা দখল করে রাজনৈতিক দলের হোর্ডিং, দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে সরকারি হোর্ডিং খোলার উদ্যোগ এখনও সে ভাবে চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৬ ০২:০৫
হোডিং-এ ঢেকেছে আকাশ।আসানসোলের বিএনআর মোড়ে।

হোডিং-এ ঢেকেছে আকাশ।আসানসোলের বিএনআর মোড়ে।

নির্বাচন কমিশনের ধমক খেয়ে মঙ্গলবার রাতেই তড়িঘড়ি কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনায় সরকারি হোর্ডিং, পোস্টার, ব্যানার খোলার কাজে নেমে পড়েছে প্রশাসন। কিন্তু আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে সরকারি জায়গা দখল করে রাজনৈতিক দলের হোর্ডিং, দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে সরকারি হোর্ডিং খোলার উদ্যোগ এখনও সে ভাবে চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

মঙ্গলবার কলকাতায় রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা এবং নানা জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ফুল বে়ঞ্চ। নির্দেশ দেওয়া হয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাবতীয় সরকারি হোর্ডিং-পোস্টার-ব্যানার খুলে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি এলাকায় রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন, ব্যানার, পোস্টারও সরিয়ে ফেলতে হবে।

এমন নির্দেশের পরেও অবশ্য বুধবার আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে সে ব্যাপারে কোনও তৎপরতা নজরে আসেনি। এ দিন আসানসোলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পুরসভার সরকারি হোর্ডিং নজরে এসেছে। একই ছবি দেখা গিয়েছে রানিগঞ্জ, বরাকর, কুলটিতেও। আবার পুরসভার কাছে ভাড়া নেওয়া বিজ্ঞাপন সংস্থার বোর্ডের উপরেও বেআইনি ভাবে রাজনৈতিক দলের পোস্টার লাগানোর ঘটনা নজরে এসেছে। বাদ যায়নি ইস্কো বা ইসিএলের সীমানা পাঁচিল, বিদ্যুতের খুঁটি।

সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনী বিধি মেনেই আমরা প্রচার করছি। কিন্তু তৃণমূল তা করছে না।’’ তাঁর দাবি, রানিগঞ্জে সিপিএমের দু’টি হোর্ডিং জোর করে সরিয়ে দিয়ে সেখানে নিজেদের হোর্ডিং লাগিয়েছে তৃণমূল। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম। বিজেপি-র জেলা সভাপতি তাপস রায় বলেন, ‘‘আমরা কমিশনের বিধি মেনে প্রচারের পক্ষে। নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তৎপর হওয়া দরকার।’’ কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রাণী মিশ্র বলেন, ‘‘নির্বাচনী বিধি মেনেই প্রচার চলছে আমাদের।’’ তৃণমূলের আসানসোল শিল্পাঞ্চল সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে এমন কিছুই করছি না আমরা। কমিশনের নির্দেশ প্রশাসন পালন করুক। আমাদের আপত্তি নেই।’’

শঙ্করপুরে। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুর শহরে সরকারি ও পুরসভার হোর্ডিং-ব্যানার গত কয়েক দিনে ধাপে-ধাপে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে সরকারি দেওয়ালে ও জায়গায় রাজনৈতিক দলের লিখন ও হোর্ডিং দেখা গিয়েছে বুধবারও। যেমন, শঙ্করপুর মোড়ে তৃণমূলের কার্যালয় লাগোয়া এডিডিএ-র জায়গা দখল করে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ নির্বাচনী ব্যানার দেখা গিয়েছে। আবার ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তা দেওয়া ব্যানার এখনও সরানো হয়নি। ওই মোড়ে প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারির সমর্থনে পোস্টারও নজরে এসেছে। রাজ্য সরকারের সংস্থা দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেডের দেওয়ালে তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে দেওয়াল লিখন রয়েছে। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের ক্যানালের উপরের সেতুও বাদ যায়নি। সেখানেও তৃণমূলের সমর্থনে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নিময় মেনেই প্রচার করতে বলা হয়েছে কর্মী-সমর্থকদের। কেউ-কেউ হয়তো অতি উৎসাহে বা না জেনে সরকারি জায়গায় দেওয়াল লিখন করে ফেলেছে। তবে আমরা কমিশনের বিধি মেনেই কাজ করতে চাই।’’

এই জেলার পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাজকর্মের উপরে কমিশনের নজর রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। আসানসোলের মহকুমাশাসক তথা মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ পেয়েছি। পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব ফাঁকা করে দিতে বলা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, নির্বাচনী প্রচারে হোর্ডিং ভাড়া দিতে গেলে সব রাজনৈতিক দলকে সমান ভাগে ভাগ করে দিতে বলা হয়েছে পুরসভাকে। এ ছাড়া ইস্কো এবং ইসিএল কর্তৃপক্ষকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এই দুই সংস্থার নিজস্ব প্রচারের জন্য হোর্ডিং ব্যবহার করে থাকে। মহকুমাশাসক জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব সরিয়ে না দিলে অভিযান হবে। পুরসভার সচিব প্রলয় সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে লাগানো হোর্ডিং ইতিমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে।’’ ইস্কো এবং ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, নির্বাচন বিধি লঙ্ঘিত হবে এমন কিছুই করা হবে না। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘আমাদের মডেল কোড অব কন্ডাক্টের দল সব সময় ঘোরাঘুরি করছে। শ’পাঁচেক হোর্ডিং সরানো হয়েছে। মঙ্গলবারের নির্দেশের পরে কাজে আরও গতি আনা হয়েছে।’’ তবে তিনি জানান, হোর্ডিং খুলে আনার পরে ফের সেখানে তা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অশান্তি এড়িয়ে দ্রুত কাজ করার চেষ্টা হচ্ছে।

hoarding election campaign assembly election 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy