ভুয়ো ই-চালান বানিয়ে বালি পাচারের অভিযোগ উঠল এ বার পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানা এলাকায়। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালতের এক আইনজীবীর। শুক্রবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে গলসি থানার পুলিশ। ধৃতের নাম প্রীতম দে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত প্রীতমের বাড়ি কলকাতার ইকোপার্ক থানার হেলা বটতলা এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় থানার সাহায্য নিয়ে ওই বাড়ি থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে গলসি থানার পুলিশ। ধৃত প্রীতম ওয়েব ডিজাইনার। তাঁর বাবা ব্যাঙ্কশাল কোর্টের আইনজীবী।
বালি পাচারের ঘটনায় এর আগে সাকির মণ্ডল ওরফে সাকিবকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাঁর মোবাইলের সূত্র ধরে ঘটনায় প্রীতমের জড়িত থাকার কথা জানা যায়। সাকিবের জাল ওয়েবসাইট বানানোয় প্রীতম সাহায্য করেছিলেন বলে জানা যায়। বিনিময়ে সাকিবের কাছ থেকে তিনি মোটা টাকা নিয়েছেন বলে জেনেছে পুলিশ। শনিবার ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। জাল ওয়েবসাইট তৈরি করা ও এই চক্রের বিষয়ে বিশদে জানতে ধৃতকে ১০ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ।
অন্য দিকে ধৃতের আইনজীবী পার্থ হাটি জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। তাঁর দাবি, ধৃতের বাবা ব্যাঙ্কশাল কোর্টের মেট্রোপলিটন বার লাইব্রেরির সেক্রেটারি এবং সিনিয়র আইনজীবী। তদন্তে সব রকম সাহায্য করবেন অভিযুক্ত। ধৃতের বাবাও একই দাবি করেন আদালতে। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে ধৃতের পুলিশি হেফাজতের আবেদন খারিজ করে দেন সিজেএম বিনোদকুমার মাহাতো। ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বল্ডে ধৃতের ১৫ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেন তিনি। তবে, জামিনের সঙ্গে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, ১৫ দিনই ধৃতকে তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরা দিতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি জেলা ছাড়তে পারবেন না। ওয়েবসাইট তৈরিতে ব্যবহৃত ডেস্কটপ উদ্ধারে পুলিশকে সাহায্য করতে হবে। শুধু তদন্তকারী অফিসারের কাছে নয়, আদালতেও নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারবেন না অভিযুক্ত।
পুলিশ এবং আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে জাল চালান-সহ বালি বোঝাই একটি লরি বাজেয়াপ্ত করে খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিস গলসি থানা এলাকা থেকে জাল চালান তৈরি করা হয়েছে বলে জানতে পারে। সেই তদন্তে উঠে আসে সাকিবের নাম। তাঁকে জেরা করেই জানা যায় প্রীতমের প্রসঙ্গে।