E-Paper

হস্টেল নিয়ে সুপারদের কাছে রিপোর্ট তলব 

সোমবার রাতে রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী একটি বিজ্ঞপ্তিতে সাত দিনের মধ্যে বহিরাগত, প্রাক্তনীদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৪৪
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ, চিত্তরঞ্জন, নেতাজি ও বিবেকানন্দ হস্টেলে ৯৮টি করে ঘর রয়েছে। তার মধ্যে ৯২ থেকে ৯৬টি ঘর ব্যবহার হয়। প্রত্যেকটি হস্টেলে ১৮৪ থেকে ১৯২ জন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ছাত্র থাকেন ৮৬ থেকে ৯৮ জন। কম ছাত্র থাকার ‘ফাঁক’ পূরণ করে দেন প্রাক্তনীরা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সব স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রদের হস্টেলের রাঁধুনিদের দাবি, ১০৫ থেকে ১৫০ জনের পর্যন্ত রান্না করতে হয়।

হস্টেলে প্রাক্তনীদের দাপটের কথা কার্যত মেনে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী একটি বিজ্ঞপ্তিতে সাত দিনের মধ্যে বহিরাগত, প্রাক্তনীদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে থাকা ১১টি (ছ’টি ছাত্রদের ও পাঁচটি ছাত্রীদের) হস্টেলের সুপারকে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতেও বলা হয়েছে। ওই হস্টেলগুলির মধ্যে গবেষক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দু’টি হস্টেল বরাদ্দ করা রয়েছে। সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহী, রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী, দু’জন ডিন-সহ পাঁচ জনকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অ্যান্টি- র‌্যাগিং’ কমিটি অনেক দিন ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান কয়েক দিন আগে পদত্যাগ করেছেন। কমিটির কয়েক জন সদস্যেরও মেয়াদ শেষ। এ ছাড়াও বেশ কিছু হস্টেলে প্রাক্তনী বা বহিরাগতদের ‘উৎপাত’ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। ঠিক হয়েছে, প্রতিটি হস্টেলের মূল দরজায় অন্তত দু’টি করে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার দেখভাল করবেন। ডিন (কলা বিভাগ) প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাদবপুর কাণ্ডের পরে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের একসঙ্গে রাখা হবে না বলে ঠিক হয়েছে। ওই দু’টি বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য পৃথক হস্টেলের ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত দু’টি হস্টেলের কথা ভাবা হয়েছে।’’

বুধবার এসএফআইয়ের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ওই সংগঠনের প্রশ্ন, প্রতিটি হস্টেলে অতিরিক্ত খাবার কাদের জন্য হয়। দীর্ঘ দিন ধরে হস্টেলের ঘর প্রাক্তনী বা বহিরাগতরা দখল করে রয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘হস্টেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে ঠিক পদক্ষেপ করতে হবে।’’

টিএমসিপি-র রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোন্দেকার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম মেনেই বহিরাগতদের হস্টেল ছাড়তে বলেছে। তবে আমাদের ধারণা, হস্টেলে কোনও প্রাক্তনী থাকেন না। গবেষকেরা আইনস্টাইন হস্টেল না পেয়ে হয়তো স্নাতকোত্তরদের হস্টেলে থাকেন।’’

আজ, বৃহস্পতিবার ফের হস্টেল সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলি কী ভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠক করবেন। সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহী বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। হস্টেল দেখভাল, অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটির মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমিটি গঠন করা হবে। হস্টেলের জায়গায় বহিরাগতদের গাড়ি রাখা যাবে না বলেও সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy