বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক অনুদান দেবে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে অনুদান পাননি, ওই প্রকল্পের স্থায়ী তালিকায় (পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট বা পিডব্লুএল) বিভিন্ন কারণে নাম নেই, জেলার গ্রামীণ এলাকার এমন অনেকেই বাড়ি তৈরির জন্য সরকারি অনুদান চেয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী দফতর থেকে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। তাঁদের মধ্যে থেকে ‘যোগ্যদের’ বাছাই করে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ নিজস্ব তহবিল থেকে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের মতোই ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে এসে জেলা পরিষদকেও কিছু বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো আমরা অর্থ সমিতিতে সিদ্ধান্ত নিই। পরে সাধারণ সভার অনুমোদন নিয়েছি। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মতোই আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে।” তিনি জানান, আপাতত জেলায় দু’শো জন যোগ্য প্রাপককে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার থেকে সদস্যদের কাছ থেকে উপভোক্তাদের নাম ও আবেদন নেওয়া শুরু করা হয়েছে।
‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে সে ভাবে দুর্নীতি বা কাটমানির অভিযোগ ওঠেনি। কিন্তু জেলা পরিষদের সদস্য কিংবা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্যদের মাধ্যমে যে নাম ও আবেদন জমা পড়বে তাতে রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ আসতে পারে। পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির অভিযোগ করছেন বিরোধীরাও। যদিও সভাধিপতির দাবি, “বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যে ভাবে নাম যাচাই করা হয়েছিল, সে ভাবেই এখানেও হবে। দুর্নীতি বা কাটমানি নিয়ে প্রশ্নের জায়গা থাকবে না।’’ জানা গিয়েছে, নাম ও আবেদন জমা পড়ার পরেই তালিকা তৈরি হবে। তালিকা ধরে তিনটে পর্যায়ে যাচাই করা হবে। কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। উপভোক্তাদের নিজস্ব নম্বর থাকবে। তার পরে যোগ্য প্রাপকদের তালিকা তৈরি হবে। কোনও অভিযোগ বা ত্রুটি ধরা পড়লেই অনুদান আটকে রাখা হবে। ২০১২ সালে বাড়ি তৈরির সরকারি অনুদান দেওয়ার যে তালিকা তৈরি হয়েছিল, সেই তালিকায় নজরে রাখা হচ্ছে।
জেলা পরিষদের কর্তাদের দাবি, বাংলার বাড়ির মতো দু’টি কিস্তিতে ৬০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। পুজোর আগেই প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া শুরু হবে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পরের বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে দেওয়া হবে। এত টাকা দেওয়ার মতো তহবিল কি আছে জেলা পরিষদের? পরিকাঠামোগত উন্নয়ন আটকে যাবে না তো? সভাধিপতির দাবি, “একটা সময় আমাদের নিজস্ব তহবিল তলানিতে ঠেকেছিল। গত আর্থিক বছরে নিজস্ব তহবিলে ২০ কোটি টাকারও বেশি জমা হয়েছে। সে জন্যই আমরা কিছু মানুষকে বাড়ি তৈরি করতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)