আদালতে তোলা হচ্ছে দোষীদের। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
অন্য দিন হাঁকডাক, ব্যস্ত চলাফেরায় সরগরম পাড়াটা সোমবার বড়ই চুপচাপ। দুপুরে আদালতে গণপিটুনি মামলার রায় ঘোষণার পরে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু দোকানপাট বন্ধ। গণ-আক্রোশের ‘শাস্তি’ হিসেবে এলাকার ১২ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ডে থমকে গিয়েছে এলাকা।
২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি, শীতের সকালে এলাকার স্টেশনমুখী রাস্তাতেই ঘটেছিল ঘটনাটা। ওই বছরের শুরু থেকেই ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় চাউর হয়েছিল ছেলেধরা গুজব। অপরিচিত লোক দেখলে সন্দেহ, হিংসার খুচরো ঘটনা চলছিল দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গাতেই। সাতসকালে বেশ কয়েকটা অপরিচিত মুখ দেখে হুঁশ হারান বারুইপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশও।
এ দিন কালনা আদালত চত্বরে, পাড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় সাজাপ্রাপ্তদের পরিজনেদের। অনেকে দাবি করেন, ফেঁসে গিয়েছেন তাঁদের ছেলেরা। তবে যা হয়েছিল, তা যে ঠিক হয়নি মেনে নেন সকলেই।
সাজাপ্রাপ্তদের আত্মীয় গীতা দাস, সুশান্ত রায়, সন্ধ্যা বসাক, রীতা হালদারেরা দাবি করেন, ঘটনার সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন ঘটনায় অভিযুক্ত ছ’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তাঁরা। সাজাপ্রাপ্ত রাজু পাত্রের বাবা, নাজির শেখের মা-রা দাবি করেন, এলাকায় কী হচ্ছে দেখতে গিয়েই বিপদে পড়েন তাঁদের ছেলেরা। দোষীদের এক আইনজীবী অতনু মজুমদার বিচারকের কাছে শাস্তি কমানোর দাবি করেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আবেদন করব।’’
এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ‘‘সে দিন উন্মত্তের মতো আচরণ করেছিলেন অনেকে। কোনও যুক্তির ধার ধারেননি। সাজা হওয়ারই ছিল।’’
রায়ের প্রতিক্রিয়া ছড়েছে শহরেও। কালনা শহরের বাসিন্দা, কলেজ শিক্ষক হাফিজুল মোল্লা বলেন, ‘‘ওই সময় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল শহরে। এ ধরনের ঘটনার কড়া শাস্তি সমাজকে বার্তা দেবে।’’ ব্যবসায়ী সুশীল মিশ্রও বলেন, ‘‘অত্যন্ত জরুরি এই রায়। ভবিষ্যতে এমন কিছু করার আগে ভাববেন লোকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy