প্রতীকী ছবি।
এফসিআইয়ের খালি ভাঁড়ার ভরানোর জন্য সহায়ক মূল্যের শিবির থেকে সংগৃহীত চালের দশ শতাংশ তাদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। সেই মতো বৃহস্পতিবার বর্ধমানের আলমঞ্জের এফসিআইয়ের গুদামে চাল দিতে গিয়ে বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে, অভিযোগ করলেন কাটোয়ার একটি চালকলের কর্মীরা।
ওই চালকল কর্মীদের অভিযোগ, গুদামের কর্মীদের দাবি মতো টাকা দিতে না চাওয়ায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁদের আটকে রেখে মারধর, এমনকী টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে আলমগঞ্জের এফসিআইয়ের গুদামে পাঠিয়ে চালকল কর্মীদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে এফসিআইয়ের সঙ্গে কথা বলে সমাধান বের করতে হবে। কোনও ভাবে অতিরিক্ত টাকা দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা খাদ্য নিয়ামক দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় মিড-ডে মিলের জন্য এফসিআইয়ের আলমগঞ্জের গুদামে চাল সরবরাহ করতে ২০ জানুয়ারি নির্দেশ জারি করে খাদ্য দফতর। শুধু পূর্ব বর্ধমানে মিড-ডে মিল চালাতে এফসিআইয়ের তিন মাস অন্তর ৮৩৯ টন চাল দরকার। জেলা প্রশাসন ঠিক করে, সরকারি শিবির থেকে সংগৃহীত ধান থেকে যা চাল উৎপাদন হবে, তার ১০ শতাংশ এফসিআই-কে দেওয়া হবে। নিয়ামক দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রায় ২৭ হাজার টন চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে জন্য এফসিআইয়ের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবারই সেই চাল পাঠানোর প্রথম দিন ছিল। এ দিন কাটোয়ার একটি চালকলকে ২৯৭ টন চাল এফসিআইয়ের গুদামে পাঠানোর নির্দেশ দেন খাদ্য নিয়ামক দেবমাল্য বসু। ওই চালকলের কর্মীরা ১১টি ট্রাকে চাল নিয়ে গুদামে যান।
চালকল কর্মীদের অভিযোগ, ট্রাক থেকে চাল নামাতে গুদামের কর্মীদের কোনও টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। তবু ৭ নম্বর গুদামের কর্মীরা ক্যুইন্টাল পিছু প্রায় ১৮ টাকা করে দাবি করে। তারা চালের বস্তা নামাতেই চায়নি। টাকা না দেওয়ায় তাঁদের আটকে রেখে মারধর ও এক কর্মীর কাছ থেকে টাকাও কেড়ে নেয় গুদামের শ্রমিকেরা, অভিযোগ ওই চালকল কর্মীদের।
জেলা চালকল মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় খাদ্য নিয়ামক দফতর জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানালে কর্তাদের হস্তক্ষেপে কর্মীরা ছাড়া পান। কিন্তু এফসিআই গুদামে এ ভাবে টাকা আদায় বন্ধ না হলে চাল পাঠানো সম্ভব নয় বলে প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ খাদ্য নিয়ামক জানান, এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ জেলা প্রশাসনই করবে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (খাদ্য) প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এফসিআই গুদামে চাল দিতে গেলেই বাড়তি টাকা চাওয়া নিয়ে বারবার এফসিআই কর্তাদের বলা হয়েছে। কর্মীদের এমন অত্যাচার মানা সম্ভব নয়।’’ এফসিআইয়ের বর্ধমান এরিয়া ম্যানেজার অঞ্জন স্যামেল বলেন, ‘‘৭ নম্বর গুদামটি আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy