Advertisement
E-Paper

বাঁশ হাতেই মনোনয়নে লাল মিছিল

সকাল ১১টা। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর, দোমড়া, বনকাটি, পানাগড়-সহ নানা এলাকা থেকে সিপিএম কর্মী, সমর্থকেরা জড়ো হন মিনিবাজার এলাকায়। সেখান থেকে মনোজপল্লি হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ব্লক অফিস।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৩
বাঁশের ডান্ডায় ঝুলছে লাল পতাকা। শুক্রবার কাঁকসা ব্লকে। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁশের ডান্ডায় ঝুলছে লাল পতাকা। শুক্রবার কাঁকসা ব্লকে। —নিজস্ব চিত্র।

পাশের এলাকায় ব্লক অফিসের অদূরেই রীতিমতো শামিয়ানা খাটিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু সেই দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের পাশেই কাঁকসাতেও তৃণমূল তাঁবু খাটিয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে সেই কাঁকসা ব্লকেই বাঁশে পতাকায় ঝোলানো লাল পতাকার বড় মিছিল দেখা গেল। সিপিএমের দাবি, এ দিন ওই ব্লকে ‘নির্বিঘ্নে’ই জমা দেওয়া গিয়েছে মনোনয়ন! সেই সঙ্গে উঠল আওয়াজ, ‘রুখে দিন সন্ত্রাস’।

সকাল ১১টা। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর, দোমড়া, বনকাটি, পানাগড়-সহ নানা এলাকা থেকে সিপিএম কর্মী, সমর্থকেরা জড়ো হন মিনিবাজার এলাকায়। সেখান থেকে মনোজপল্লি হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ব্লক অফিস। দেখা যায়, মিছিলের সামনে ছিলেন সিপিএমের প্রচুর মহিলা কর্মী। প্রায় প্রত্যেকের হাতেই দেখা গিয়েছে নানা ধরনের বাঁশের ডান্ডায় ঝোলানো লাল পতাকা। ছিলেন সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডল, দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার প্রমুখ।

অদূরেই তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরাও জড়ো হয়েছিলেন। এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা ব্লক অফিসের অদূরে দমকলকেন্দ্রের কাছে এবং বিএলএলআরও অফিস লাগোয়া এলাকায় তৃণমূল দু’টি শিবিরও বানিয়ে ফেলে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিপিএমের মিছিলটি যায় বিএলএলআরও অফিস লাগোয়া এলাকা দিয়ে। গোলমালের আশঙ্কায় ওই ‘শিবির’ থেকে তৃণমূল কর্মীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।

তবে সরা যাবে না ভোট ময়দান থেকে, এই বার্তা দিতে ‘বাঁশ’ হাতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই সিপিএম এসেছিল বলে এলাকাবাসী জানান। মিছিলের আগাগোড়া সন্ত্রাস রোখার বার্তা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানের দাবি, একশো দিনের প্রকল্পে ‘লোক দেখে কাজ দেওয়া’ বন্ধেরও দাবি জানানো হয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন আগেই জানিয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। গোলমালের আশঙ্কায় সকাল থেকেই বিশাল পুলিশ বাহিনীও এলাকায় মোতায়েন করা হয়। পুলিশের দাবি, বিকেল পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটেনি।

এলাকাবাসী জানান, এ দিনের মিছিলে মহিলাকর্মীদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। কেন এমনটা? সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডল বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যেই নানা সময়ে মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে। রুজির প্রশ্নেও তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। এ সবের প্রতিবাদেই তাঁরা জড়ো হয়েছিলেন।’’

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কাঁকসা ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে ছ’টিতে তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। জানা গিয়েছে, কাঁকসা ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মোট ১৩২টি আসনের ১০৯টিতে এ দিন সিপিএম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। বেশ কিছু আসনে শংসাপত্রে সমস্যা থাকার কারণে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যায়নি বলে সিপিএম নেতৃত্ব জানান। একমাত্র বিদবিহার পঞ্চায়েতে কোনও মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। তবে বিদবিহার পঞ্চায়েতের একটি আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি সিপিএম। এ বিষয়ে বীরেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘যে আসনগুলিতে মনোনয়ন দেওয়া বাকি, তা মহকুমাশাসকের দফতরে জমা দেওয়া হবে।’’ কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে সাতটিতে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম।

যদিও এ দিন বাঁশ হাতে সিপিএমের ওই মিছিল প্রসঙ্গে উত্তমবাবু বলেন, ‘‘সন্ত্রাস কারা করতে চাইছে, ওই মিছিল থেকেই আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।’’ যদিও বীরেশ্বরবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ওই মিছিল আসলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধ।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy