Advertisement
E-Paper

চায়ে চুমুক দিয়ে জনসংযোগ

সব দলই বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনটিকে বেছে নেয় ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের হাতিয়ার হিসাবে। এ বার সেই ছবিটা সে ভাবে চোখে পড়ছে না।

সৌমেন দত্ত ও কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৮
খোশমেজাজে: রবিবার বর্ধমান জেলা অফিসে তৃণমূল নেতারা। নিজস্ব চিত্র

খোশমেজাজে: রবিবার বর্ধমান জেলা অফিসে তৃণমূল নেতারা। নিজস্ব চিত্র

এ রাজ্যে নববর্ষের সময় ভোট হলে পাড়ায় পাড়ায় রাজনৈতিক দলগুলির যে তৎপরতা দেখা যায়, তা এ বার অনেকটাই উধাও। সব দলই বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনটিকে বেছে নেয় ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের হাতিয়ার হিসাবে। এ বার সেই ছবিটা সে ভাবে চোখে পড়ছে না।

এর কারণ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভবিষ্যৎ ঘিরে সংশয়ের বাতাবরণ। ওই নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের জারি করা অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছে তৃণমূল। তার শুনানি হওয়ার কথা আজ, সোমবার। শাসক থেকে বিরোধী—সব শিবিরের চোখই এখন সোমবারের দিকে। ফলে অন্য বছরের মতো রবিবার, পয়লা বৈশাখে সে ভাবে পথে নামতে দেখা যায়নি রাজনৈতিক দলগুলিকে। তবু তার মধ্যেও উৎসবের মোড়কে বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও কোথাও জনসংযোগ চলেছে। রাজনৈতিক দলগুলির অফিস মূলত মেতে থেকেছে নির্ভেজাল আড্ডা আর শুভেচ্ছা বিনিময়ে।

মেমারি ১ ব্লকের সিপিএম প্রার্থীরা শুভেচ্ছা বিনিময়ের নামে জনসংযোগ করেছেন। সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সনৎ সিংহের অভিযোগ, “তৃণমূলের হুমকির জন্য প্রার্থীদের একটা বড় অংশ ভয়ে রয়েছেন। তার মধ্যেও কোনও কোনও প্রার্থী সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে গ্রামের মানুষের কাছে গিয়েছেন। কয়েকটি জায়গায় দেওয়াল লিখনও হয়েছে।” কী ভাবে শাসকদলের ‘হুমকি’র হাত থেকে প্রার্থীদের রক্ষা করা যায়, সে নিয়ে এ দিন বর্ধমানে সিপিএমের জেলা দফতরেও মশগুল ছিলেন নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায় কী হতে পারে, তা নিয়েও চলেছে জল্পনা। দলের এক নেতার কথায়, “মেমারি, ভাতার, খণ্ডঘোষ, রায়নার মতো বেশ কিছু জায়গাতে আমরা প্রার্থী দেওয়ার জন্য তৈরি। কিন্তু, শুধু মনোনয়নের দিন বাড়িয়ে তো লাভ হবে না। নির্বিঘ্নে যাতে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায়, তার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে প্রশাসনকে।”

উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি আদৌ সম্ভব কি, এই প্রশ্নটাই খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিজেপি-র জেলা নেতারা। দলের রাজ্য সম্পাদক রাজীব ভৌমিক রবিবার পূর্বস্থলীর বগপুর-জাহানাবাগ এলাকা ঘোরার ফাঁকে বললেন, “দেখছেন না, চারদিকে কী রকম ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট রায় দেওয়ার পরেও রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী করবে, সেটা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।” বিজেপি-র দাবি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন বাড়লে তারা পূর্বস্থলী, কালনা থেকে রায়না, আউশগ্রামের সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য ঝাঁপাবেন।

শাসকদল অবশ্য অনেকটাই চিন্তামুক্ত। শনিবার রাতটা কালনার বাড়িতেই ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। এ দিন সকালে হেমাতপুর মোড়ে দলীয় দফতরে যাওয়ার পথে নসরতপুর-সহ বেশ কয়েকটি চায়ের দোকানে গাড়ি দাঁড় করান। বাঁশের তৈরি বেঞ্চে বসে চায়ে চুমুক দেওয়ার ফাঁকেই নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সঙ্গে জনসংযোগের পাঠ ঝালিয়ে নেন অভিজ্ঞ ওই নেতা। তার পরে দলীয় দফতরেও দিনভর রাজনীতি আর শুভেচ্ছা বিনিময়। বেশ কয়েকটি মন্দিরেও যান তিনি। জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি দেবু টুডু দিনভর কালনার সিঙ্গেরকোনের পার্টি অফিসে ছিলেন। ও দিকে, জেলা তৃণমূল দফতরেও আড্ডার মেজাজে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত, উজ্জ্বল প্রামাণিক, বিধায়ক অলোক মাঝিদের। পরস্পরের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ফাঁকেই কী ভাবে দলীয় পতাকা ও পোস্টার ব্লকে ব্লকে পৌঁছনো হবে, তার আলোচনা চলেছে।

বিরোধীরা তো ফের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? শুনে দেবুবাবুর কটাক্ষ, “ভালই তো, বিরোধীরা প্রার্থী পেলে মনোনয়ন জমা দিক না। কে আর বারণ করেছে!”

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy