আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের মঞ্চ। ফাইল চিত্র
বাংলা ভাষার কবির জন্মদিনে বিশেষ সমাবর্তনের আয়োজন। কিন্তু সেখানে ঠাঁই পেল না বাংলাই। শহরের রাস্তায় টাঙানো বোর্ড, অনুষ্ঠান মঞ্চের ফ্লেক্স থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের ভাষণ— সবই হল ইংরেজিতে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুধু বক্তব্য রাখেন বাংলায়। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার সমাবর্তনে বাংলা ভাষাকে কার্যত ব্রাত্য রাখার অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন আসানসোলের অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, যা করা হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি মেনেই।
নজরুলের জন্মদিনে শেখ হাসিনাকে সাম্মানিক ডি লিট দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই উপলক্ষে দু’দেশের অনেক অতিথি হাজির ছিলেন। কিন্তু আসানসোলের অনেক বাসিন্দার দাবি, অনুষ্ঠানটি আরও আকর্ষণীয় হতে পারত যদি বাংলায় সঞ্চালনা করা হত। ভাষণ, নানা ঘোষণা থেকে পদক প্রাপকদের মঞ্চে ডাকা— সবই হয়েছে ইংরেজিতে। শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হাসিনাকে স্বাগত জানাতে ইংরেজিতেই ব্যানার-পোস্টার টাঙানো হয়। এ সবের পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বাংলায় বক্তৃতা অনেকেরই মনে ধরেছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরবাসীর একাংশ। তাঁদের দাবি, ইংরেজি নিয়ে কোনও বিদ্বেষ নেই। কিন্তু অনুষ্ঠানটি বাংলায় হলে তা শহরের সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হত। নজরুলের ভাইপো রেজাউল করিম বলেন, ‘‘সে দিন অনুষ্ঠানে থেকে ইংরেজির দাপটে খানিক লজ্জাই পেয়েছি।’’ শহরে সাহিত্যকর্মী হিসেবে পরিচিত পার্থপ্রতিম আচার্য, অরুণাভ সেনগুপ্তদের কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সে দিনের ওই উপস্থাপনা ভাল লাগেনি।’’
যদিও ইংরেজিতে বলা ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধিতে ইংরেজি ভাষাতেই সমাবর্তন পরিচালনার নির্দেশ রয়েছে। এর অন্যথা করতে পারি না। তবে সমাবর্তনের বাইরে সবটাই বাংলায় করার চেষ্টা করেছি।’’ যদিও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একাংশের দাবি, সংবিধির গন্ডিতে থেকেও বাংলা ব্যবহার করা যেতে পারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy