Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Accident

Accident: দুর্ঘটনার পর ওষুধও পাইনি, উত্তরাখণ্ড প্রশাসনকে দুষে দাবি মৃতার স্বামীর

মৃতার স্বামীর দাবি, দুর্ঘটনার চার ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ শুরু করে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। এমনকি, উদ্ধারের পর হাসপাতালে প্রথম দিন ওষুধ পাননি তাঁরা।

উত্তরাখণ্ডে দুর্ঘটনায় ওই রাজ্যের প্রশাসনকেই দুষেছেন মৃতার স্বামী দীপু খান।

উত্তরাখণ্ডে দুর্ঘটনায় ওই রাজ্যের প্রশাসনকেই দুষেছেন মৃতার স্বামী দীপু খান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২১ ১৮:১৬
Share: Save:

উত্তরাখণ্ডে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারকাজে চূড়ান্ত প্রশাসনিক অব্যবস্থার অভিযোগ করলেন এক মৃতার স্বামী। তাঁর দাবি, দুর্ঘটনার চার ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ শুরু করে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। এমনকি, উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রথম দিন সেখানে ওষুধ পাননি তাঁরা। পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকদের গাড়িতে উত্তরাখণ্ড সরকারের নজরদারির ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয় বলেও দাবি তাঁর।

শনিবার দুপুরে উত্তরাখণ্ডে মৃত পাঁচ বাঙালি পর্যটক কিশোর ঘটক (৫৯), শ্রাবণী চক্রবর্তী (৫৫), সুব্রত ভট্টাচার্য (৬১), চন্দনা ভট্টাচার্য খান (৬৪) এবং রুনা ভট্টাচার্য (৫৬)-র দেহ আনা হয় দুর্গাপুর এবং রানিগঞ্জ-আসানসোল শিল্পাঞ্চলে তাঁদের বাড়িতে। দুর্গাপুজোর পর ২১ অক্টোবর উত্তরাখণ্ডে বে়ড়াতে গিয়েছিলেন ওই পাঁচ জন-সহ ৩০ পর্যটক। বুধবার, ২৭ অক্টোবর উত্তরাখণ্ডের মুন্সিয়ারি ঘোরাঘুরি করে কৌশানি ফেরার পথে পর্যটকদের দু’টি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। গাড়িগুলি খাদের নদীতে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কিশোরদের। আহত হন ১৫ জন।

এই ঘটনায় উত্তরাখণ্ড প্রশাসনকেই দুষেছেন চন্দনার স্বামী দীপু। তিনি নিজেও আহত হয়েছেন। দীপুর অভিযোগ, ‘‘গাড়ির ব্রেক ফেল না হলে এই দুর্ঘটনা হয় না। ঘটনার দিন আমাদের গাড়ির ক্লাচপ্লেট আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ড্রাইভারকে ক্লাচপ্লেট বদলানোর কথা বলেও লাভ হয়নি। ড্রাইভার বলেছিলেন, 'নৈনিতালে গিয়ে ক্লাচপ্লেট বদল করব।' পাহাড়ি রাস্তায় সামনের গাড়ি মোড় ঘুরতেই উল্টে যায়। আমাদের গা়ড়ি ব্রেক কষলেও সেটি থামেনি। পিছনের গাড়ির ধাক্কায় সেটি গিয়ে পড়ে খাদের নদীতে। আমরা গাড়ির মাঝখানে ছিলাম। তার গেট ভেঙে তিন জন খাদের নদীতে পড়েছিলাম। বাকিরা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান। পর্যটকদের জন্য ব্যবহৃত গাড়িগুলি পুরনো হলেও সে বিষয়ে উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের নজরদারি নেই। দুর্ঘটনার চার ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ শুরু করে প্রশাসন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সারা দিন ওষুধ পাইনি। পরে দিল্লিতে গিয়ে নিজের টাকায় ক্ষতে ব্যান্ডেজ করিয়েছি।’’

ফিরল উত্তরাখণ্ডে মৃতদের দেহ।

ফিরল উত্তরাখণ্ডে মৃতদের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তরাখণ্ডের হলদিয়ানি থেকে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্সে করে মৃতদের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লি এয়ারপোর্টে। শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ বিশেষ কার্গো বিমানে পাঁচটি দেহ নামানো হয় দমদম বিমানবন্দরে। পশ্চিম বর্ধমানের দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটকের তত্ত্বাবধানে হস্তান্তর করা হয় দেহ। দমদম থেকে সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে মন্ত্রীর কনভয়ের সঙ্গে শোভাযাত্রা করে শববাহী গাড়িগুলি রওনা হয় আসানসোলের দিকে। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের আত্মীয়-পরিজন এবং আহতরাও।

দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুব্রত ও তাঁর স্ত্রী রুনার দেহ নামিয়ে গাড়ি আসে রানিগঞ্জে। রানিগঞ্জের পঞ্জাবি মোড়ে বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে মৃতদেহ হস্তান্তর করেন মন্ত্রী। রানিগঞ্জের সিপিএম নেতা কিশোর ঘটকের দেহ প্রথমে আনা হয় সিয়ারসোলে তাঁর বাড়িতে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সিয়ারসোল সিপিএমের পার্টি অফিসে। কিশোরে কর্মক্ষেত্র কুনুস্তরিয়া কোলিয়ারির পর তা নিয়ে যাওয়া হয় রানিগঞ্জের সিটু-র সেন্ট্রাল পার্টি অফিস কয়লা ভবনে। মরদেহ নিয়ে শহর জুড়ে শোকযাত্রা হয়। রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজের অধ্যাপিকা চন্দনার দেহ আনা হয় কলেজের আবাসনে। সেখান থেকে তা নিয়ে যাওয়া হয় হোসেন নগরে। একই ভাবে আসানসোলের শ্রাবণী চক্রবর্তীর দেহ আনা হয় আসানসোলের মহিশীলা কলোনিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Uttarakhand Asansol Raniganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE