Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘দিন পাল্টাবে’, ব্রিগেড ঘুরে দাবি ৮৭ বছরের মহারানির

কোঙার পরিবারের খাসতালুক মেমারিতে ২০১০ সালের পুরভোটের সময় থেকেই তৃণমূলের আধিপত্য। তবে মহারানিদেবীর খোঁজ রাখেন শহরবাসী।

 সমাবেশ থেকে ফিরে গাড়ি থেকে নামছেন মহারানি কোঙার। নিজস্ব চিত্র।

সমাবেশ থেকে ফিরে গাড়ি থেকে নামছেন মহারানি কোঙার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২১ ০৭:২১
Share: Save:

আগের দিন থেকে জেদ ধরেছিলেন তিনি। ছেলেদের বলছিলেন, ‘‘আমাকে ব্রিগেডে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দে।’’ কিন্তু গাড়ি মিলছিল না। রবিবার সকালে গাড়ির ব্যবস্থা করেন দলের এক কর্মী। আর তার পরেই সাদা সুতির শাড়ি ও জুতো পরে, কাঁধে কালো ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন ৮৭ বছরের বৃদ্ধা। সভা শেষে সন্ধ্যায় মেমারির বাড়িতে ফিরে মহারানি কোঙার বলেন, ‘‘১৪ বছর বয়স থেকে ব্রিগেডে যাচ্ছি। ব্রিগেড সমাবেশ হবে, আর আমি বাড়িতে শুয়ে-বসে কাটাব, এ আবার হয় না কি!’’

মেমারির প্রাক্তন বিধায়ক মহারানিদেবীর আরও পরিচয়, তিনি বিনয় কোঙারের স্ত্রী, হরেকৃষ্ণ কোঙারের ভ্রাতৃবধূ। তাঁর দুই ছেলে সুকান্ত কোঙার ও অভিজিৎ কোঙারও সিপিএমের নানা দায়িত্বে রয়েছেন। এ দিন তাঁরাও ব্রিগেডে গিয়েছিলেন। তবে মায়ের সঙ্গে গাড়িতে নয়, অন্য কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে লোকাল ট্রেনে।

অভিজিৎবাবু রবিবার বলেন, ‘‘শনিবার বিকেল থেকে ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য জেদ করছিলেন মা। ৮৭ বছর বয়স, পা ভেঙেছিল বলে জোর নেই। আমি দ্বিধায় ছিলাম। মেমারি শহরে কোনও গাড়িও পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ আউশা গ্রামের এক কর্মী ফোনে জানান, তিনি গাড়ি নিয়ে আসছেন। মাকে আটকে রাখা আর সম্ভব ছিল না। তাঁকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আমরা ট্রেনে রওনা হই।’’ মহারানিদেবীর বৌমা শ্যামলীনাদেবীও ছাত্রাবস্থা থেকে ব্রিগেডে যাচ্ছেন। পা ভেঙে তিনি ঘরবন্দি। তিনি জানান, ‘‘যেতে না পারলে মা মন খারাপ করে বসে থাকবেন। তার চেয়ে ব্রিগেডে যাওয়া ভাল।’’ গাড়িতে তাঁর সঙ্গে থাকা অমল ঘোষ বলেন, ‘‘মঞ্চের কাছে রোদের মধ্যে বসেছিলেন কাকিমা (মহারানিদেবী)। আমরা জোর করে একটি গাছের নীচে নিয়ে যাই। সেখানে কাগজ পেতে বসি।’’

কোঙার পরিবারের খাসতালুক মেমারিতে ২০১০ সালের পুরভোটের সময় থেকেই তৃণমূলের আধিপত্য। তবে মহারানিদেবীর খোঁজ রাখেন শহরবাসী। এই বয়সে এত ধকল নিচ্ছেন কী ভাবে? মহারানিদেবী বলেন, ‘‘জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, মানুষের অভাব বাড়ছে। এখন কি শুয়ে-বসে থাকা উচিত?’’ সন্ধ্যায় ব্রিগেড থেকে ফিরে বাড়ি ঢোকার মুখে তিনি বলেন, ‘‘প্রচুর তরুণী-তরুণীকে মাঠে দেখলাম। মুক্ত হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দিন পাল্টাবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE